৩৮ বছর বয়সেও লিওনেল মেসি যেন সময়ের বাঁধন ছিঁড়ে ছুটে চলেছেন। আর্জেন্টিনার জার্সিতে দেশের মাটিতে তাঁর শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে তিনি আবারো প্রমাণ করলেন, কেন তিনি সর্বকালের সেরা।
এস্তাদিও মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে মেসির জোড়া গোল ছিল এক বিশেষ মুহূর্ত। ৩৮ বছর বয়সেও তিনি যে একই রকম অপ্রতিরোধ্য, তার প্রমাণ মিলেছে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ম্যাচে। থিয়াগো আলমাদার ক্রস থেকে বাঁ পায়ের ছোঁয়ায় তিনি যখন বল জালে জড়ালেন, তখনো তাঁর জাদু দেখে আরেকবার মুগ্ধ হলো সবাই। এই স্টেডিয়ামেই দুই দশক আগে, ২০০৫ সালে, তিনি দেশের মাটিতে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন। সেই সময়টা ছিল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচ, আর এবারও তাই। সময়ের চাকা ঘুরে আবার তিনি ফিরে এলেন সেই মঞ্চে, কিন্তু এবার বিদায়ের সুর বাজছে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছেন, তাঁর ফুটবল জীবনের বৃত্ত সম্পূর্ণ হতে চলেছে। জাতীয় দলের হয়ে যা কিছু স্বপ্ন দেখেছেন, তার সবকিছুই অর্জন করেছেন। এমন অনবদ্য সমাপ্তি তিনি নিজেও কখনো কল্পনা করেননি। তাঁর কোনো অভিযোগ নেই, কারণ এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি আর চাইতেই পারেন না।
দেশের মাটিতে মেসির এই বিদায়ী ম্যাচটি ছিল আবেগ এবং ভালোবাসার এক মিশ্রণ। ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সংগীতের সময় তাঁর চোখে ছিল এক অদ্ভুত আভা, যেন অতীতের সব স্মৃতি ঝলসে উঠছে। তিন সন্তানের পাশে দাঁড়ানো মেসির ছলছলে চোখ যেন বুঝিয়ে দিল, এটাই শেষের শুরু।
২০২৬ সালের বিশ্বকাপে তিনি খেলবেন কি না, তা নিয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত উত্তর দেননি। তবে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম 'লা নাসিওন' জানিয়েছে, আগামী জুনে দেশের মাটিতে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করা হতে পারে। যদি তা না হয়, তবে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে এই ম্যাচটিই দেশের মাটিতে তাঁর শেষ ম্যাচ হয়ে থাকবে।
এস্তাদিও মনুমেন্তালের এই ম্যাচটি যেন একটি যুগের সমাপ্তি। ছোট্ট রোজারিও শহর থেকে উঠে আসা মেসি, দুই দশক ধরে যিনি ফুটবলকে ভালোবাসতে শিখিয়েছিলেন, তাকে বিদায় জানানোর সময়টা সত্যিই কঠিন। মেসি হয়তো মনে মনে বলছেন, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই মাঠে!
ডিবিসি/এফএইচআর