সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়ার প্রায় দশ মাস পেরিয়ে গেলেও যশোরের মণিরামপুরে সরকারিভাবে বিতরণকৃত চালের বস্তায় তার নামাঙ্কিত স্লোগান রয়ে গেছে। উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নে দুস্থ নারীদের জন্য নির্ধারিত ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট’ (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় এই চাল বিতরণ করা হয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে চাঞ্চল্য ও প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৫শে জুন) মণিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় দুস্থ নারীদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। বিতরণের জন্য ব্যবহৃত প্রতিটি চালের বস্তার গায়ে কালো কালিতে বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’।
এ বিষয়ে রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বর) রেজাউল ইসলাম বলেন, "শেখ হাসিনার নাম লেখা চালের বস্তাই উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। উপস্থিত অনেকেই এর কারণ জানতে চেয়েছেন, কিন্তু আমরা কোনো উত্তর দিতে পারিনি। বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার তুহিন বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন।"
রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কৃষ্ণগোপাল মুখার্জি বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ইউনিয়নের ২০৬ জন উপকারভোগীর প্রত্যেককে তিন মাসের চাল একবারে দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিটি বস্তাই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নামাঙ্কিত ছিল। তবে কেন এমন বস্তা সরবরাহ করা হয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি।
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একে অপরের ওপর দায়িত্ব চাপাচ্ছেন। মণিরামপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান বলেন, "চালের বস্তাগুলো শেখ হাসিনার শাসনামলের। বস্তায় নাম থাকলে সেটির উপর রং করে চাল ছাড়ার জন্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে। বিষয়টি খেয়াল রাখার দায়িত্ব ছিল গুদাম কর্মকর্তার।"
অন্যদিকে, মণিরামপুর সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান দাবি করেন, "এই বস্তাগুলো বাইরের জেলা থেকে এসেছে। আমরা নাম কালো কালি দিয়ে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। গুদামের শ্রমিকদের ভুলের কারণে হয়তো এমনটি হতে পারে।"
এই কর্মসূচির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, "চালের বস্তা থেকে শেখ হাসিনার নাম মুছে চাল বিতরণের জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা রয়েছে। কেন এমনটি হলো, তা আমার জানা নেই।"
ডিবিসি/এএনটি