বিবিধ

যেভাবে চিনবেন জাল টাকার নোট

ডেস্ক রিপোর্ট

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১লা এপ্রিল ২০২৩ ০৭:০২:৩৪ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়, বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসব সামনে রেখে বাজারে জাল টাকার নোট ছাড়ে। তারপর জাল নোটগুলো এক হাত থেকে অন্য হাতে ঘুরে বেড়ায়। জাল নোট সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় অনেকেই প্রতারণার শিকার হন। এখন প্রশ্ন হলো, জাল নোট কীভাবে চিনবেন?

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সমস্ত ব্যাংকগুলোর ওপর জারি করা কেন্দ্রীয় এক নির্দেশনায় বলা আছে, ঈদের আগে নোট জাল চক্রের 'অপতৎপরতা' বাড়ে এবং তার জন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে কীভাবে জাল নোট সহজে চেনা যায়, সে সম্পর্কেও নির্দেশনাগুলো নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাধারণত ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের নোট বেশি জাল হয়। এ ক্ষেত্রে টাকায় থাকা নিরাপত্তা সুতা, রং পরিবর্তনশীল কালি, অসমতল ছাপা, জল ছাপ ইত্যাদি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে।
 
১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকাসহ প্রত্যেক ধরনের নোটের সামনে ও পেছনে দুদিকের ডিজাইন, মধ্যভাগের লেখা, নোটের মূল্যমান ও ৭টি সমান্তরাল সরলরেখা উঁচু-নিচুভাবে মুদ্রিত থাকে। ফলে হাত দিলে একটু খসখসে মনে হয়।

নোটের ডান দিকে ১০০ টাকার ক্ষেত্রে তিনটি, ৫০০ টাকার ক্ষেত্রে ৪টি ও ১০০০ টাকার নোটে ৫টি ছোট বৃত্তাকার ছাপ আছে; যা হাতের স্পর্শে উঁচু-নিচু লাগে। এ বৈশিষ্ট্য জাল নোটে সংযোজন করা সম্ভব নয়।
 
জাল নোটের জলছাপ অস্পষ্ট ও নিম্নমানের হয়। আসল নোটে বাঘের মাথা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম-এর স্পষ্ট জলছাপ আছে; যা ভালো করে খেয়াল করলে আলোর বিপরীতে দেখা যায়।

প্রত্যেক মূল্যমানের নোটেই বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো সংবলিত নিরাপত্তা সুতা থাকে। নোটের মূল্যমান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো নিরাপত্তা সুতার ৪টি স্থানে মুদ্রিত থাকে।

এ নিরাপত্তা সুতা অনেক মজবুত, যা নোটের কাগজের সঙ্গে এমনভাবে সেঁটে দেওয়া থাকে যে নখের আঁচড়ে বা মুচড়িয়ে সুতা কোনোভাবেই উঠানো সম্ভব নয়। নকল নোটে এত নিখুঁতভাবে সুতাটি দিতে পারে না।

১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের প্রত্যেক প্রকার নোটের ওপরের ডানদিকে কোণায় ইংরেজি সংখ্যায় লেখা নোটের মূল্যমান রং পরিবর্তনশীল কালিতে মুদ্রিত থাকে।

ফলে ১০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের নোট ধীরে ধীরে নড়াচড়া করলে মূল্যমান লেখাটি সোনালি থেকে সবুজ রং ধারণ করে। একইভাবে ৫০০ লেখা লালচে থেকে সবুজাভ হয়। অন্যদিকে জাল নোটের ব্যবহৃত রং চকচক করলেও তা পরিবর্তিত হয় না।

প্রত্যেক প্রকার টাকার নোটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম ও নোটের মূল্যমান জলছাপ হিসেবে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম ও নোটের মূল্যমান প্রতিকৃতির তুলনায় উজ্জ্বল দেখায়। জাল নোটে এসব বৈশিষ্ট্য থাকে না।

এ ছাড়া স্বল্পমূল্যেও বিভিন্ন ব্রান্ডের জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন আছে। ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়েও জাল নোট সহজেই পরীক্ষা করা যায়। নকল নোট ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে দেখলে শুধু একটা রেখা দেখা যাবে।

জাল নোট চেনার আরও কয়েকটি সহজ উপায়-

জাল নোটগুলো নতুন হবে

জাল টাকার নোটগুলো সাধারণত নতুন হয়। কারণ জাল নোটগুলো কাগজের তৈরি, তাই পুরাতন হয়ে গেলে সেই নোটগুলো নাজেহাল হয়ে যায় বা তা অতি সহজেই বুঝা যায়।

ঝাপসা দেখায়

জাল নোট আসলের মতো ঝকঝকে থাকে না, দেখতে ঝাপসা দেখায়। টাকা লেনদেন করার সময় একটু মনোযোগ সহকারে দেখলেই বোঝা যায়।

কাগজের মতো ভাঁজ হয়

জাল নোট কাগজের মতো ভাঁজ হয়। হাতের মধ্যে নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করে কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিলে ভাঁজ পরে যায়। আর আসল নোট ভাঁজ হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক

নোট সোজা করে ধরুন, এবার লক্ষ্য করুন নোটের বাম পাশে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একটি সরল রেখা আছে। একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন ওটা কোনো রেখা নয়। সেখানে স্পষ্টভাবে ইংরেজিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কথাটা লেখা আছে।

ভাঁজ করলেও সহজে ভাঙে না

আসল টাকা সবসময় দুটি অংশ দিয়ে তৈরি হয়। টাকার দুই পাশে দুটো নোট জোড়া লাগানো থাকে এবং এটা হরিণের চামড়া দিয়ে তৈরি বলে পানিতে ভেজালেও খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে যাবে না। আর জাল নোট পানিতে ভেজানোর সঙ্গে সঙ্গেই তা ভেঙে যাবে।

আসল নোট সবসময় খসখসে

আসল টাকার নোট সব সময় খসখসে হয়। আর জাল নোট মসৃণ হয়।

আল্ট্রা ভায়োলেট লাইট  

জাল টাকা শনাক্তের অন্যতম উপায় হচ্ছে আল্ট্রা ভায়োলেট লাইট । এই লাইটের মাধ্যমে শনাক্ত করা খুবই সহজ। আসল নোটে এই লাইটের আলো ধরলে নোটের ওপর রেডিয়ামের প্রলেপ জ্বলজ্বল করে উঠবে। জাল নোটে তা হয় না।

 
ডিবিসি/রূপক

আরও পড়ুন