প্রেম করে বিয়ে করলেও, সে বিয়ে বেশিদিন টেকে না। আবার এমনও দৃষ্টান্ত আছে যারা প্রেম করে বিয়ে করে তা টিকিয়ে রেখেছেন যুগের পর যুগ। তবে বর্তমানে প্রেমের বিয়েতেও বিচ্ছেদের হার বেড়েছে।
প্রেম করে বিয়ে করে দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাটানোর পরও তাদের পথ আলাদা হয়ে যায় কেন? কী কী কারণে একটি সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরে ও শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদ ঘটে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
সঙ্গীকে কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেন না : মেয়েদের ক্ষেত্রেই সাধারণত এই সমস্যা বেশি হয়। কেন তারা সঙ্গীর প্রেমে পড়েছিলেন সে কথা নিজেরাও জানেন না। ফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই তাদের নানা রকম খুঁত বের করেন। যেমন- তাদের মনে হয় সঙ্গী ঠিক করে কথা বলতে পারে না, আবার কারও মনে হয় সঙ্গী তাকে ঠিক মতো বোঝে না, কারও সঙ্গী আবার অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বচ্ছল না হলেও সমস্যা তৈরি হয়।
বেশি চাহিদা : সঙ্গীর থেকে অতিরিক্ত চাহিদা থাকলে কিছুতেই সেই প্রেম টেকে না। প্রত্যেক মানুষেরই চাওয়া, পাওয়ার একটা সীমা থাকা প্রয়োজন। এমন কিছু মানুষ আছেন যারা সঙ্গীকে ঠকিয়ে প্রচুর জিনিস আদায় করতে চান। এটা সম্পর্কে ফাটল তৈরি করে।
ভরসা এবং বিশ্বাস : যে কোনও সম্পর্কের ভিত্তি হল ভরসা এবং বিশ্বাস। যেখানে বিশ্বাস নেই সেই সম্পর্ক কিন্তু কখনই টেকে না। যারা ঘন ঘন সঙ্গী বদলান তাদের নিজের উপরই কোনও ভরসা থাকে না। সম্পর্কে পরষ্পরের প্রতি শ্রদ্ধা থাকা প্রয়োজন।
যোগাযোগের সমস্যা : অনেকেই ভাবেন প্রেম করলে বুঝি সারাদিন কথা বলাটাই নিয়ম। কিন্তু এটা ঠিক নয়। এছাড়াও অনেকেই থাকেন যারা সঙ্গীর সাথে ঠিক করে কথা বলেন না। ফোন, টেক্সট কোনও কিছুই করেন না। এই মানসিকতা থেকেও অনেক প্রেম কেটে যায়।
বাস্তববোধ থাকে না : অনেকর মধ্যেই বাস্তববোধের প্রচণ্ড অভাব থাকে। এরা অনেক বেশি আবেগে ভাসতে পছন্দ করেন। জীবনটাকে সিনেমার মতো দেখতে চান। সারাক্ষণ সঙ্গীর সঙ্গে ঘোরাঘুরি, বেড়ানো, শপিং, রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া, সিনেমা দেখা এসব করতে পছন্দ করেন। কিন্তু এরকমটা সবসময় হয় না। জীবনে অর্থ, প্রতিষ্ঠা এসব না থাকলে প্রেম টেকে না।
যে কোনো সম্পর্ক মজবুত করতে হলে যোগাযোগের প্রয়োজন হয়। শুধু কি আর্থিক সমস্যার কারণেই বিচ্ছেদ ঘটে? আসলে এ কারণটিকে সামনে আনা হলেও মূলত কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে বা পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাবেই বিচ্ছেদ ঘটতে পারে।
দম্পতিদের মধ্যে দূরত্বও তাদের বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ। কেবল আই লাভ ইউ বললেই ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় না, ব্যবহারেও এটি ফুটে ওঠে। অনেক সময় শারীরিক স্পর্শও অনেক কিছুর প্রকাশ করে।
তবে যদি এইটুকু শারীরিক সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে সম্পর্কের মধ্যে নিস্তেজতা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে ডিভোর্স হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিল না থাকলে প্রায় দৈনিকই ঘরে অশান্তি দেখা দেবে। এরপর মনোমালিন্য, একজনের সঙ্গে অন্যজন কথা না বলা ইত্যাদি কারণে বিচ্ছিন্নতা ও একাকীত্ব বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন এমন সম্পর্ক টেনে নিয়ে গেলেও এক সময় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটতে পারে।
একটি সম্পর্ক শুধু ভালো আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে টিকে থাকতে পারে না। তার চেয়ে একে অন্যকে ইমোশনালি সাপোর্ট করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় দম্পতিরা কমিউনিকেশন গ্যাপের পাশাপাশি ইমোশনালি সাপোর্টের অভাব অনুভব করে।
এমন পরিস্থিতিতে কেবল শারীরিক নয়, মানসিক দূরত্বও আসতে শুরু করে। এভাবেই একবার একে অপরের প্রতি আকর্ষণ কমে গেলে একসঙ্গে থাকা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।