রংপুরের চারশ'র বেশি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বা হিজড়া বেশিরভাগই ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া তাদের আবাসন একটি বড় সমস্যা।
হিজড়া নেতারা বলছেন, তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও তাদের জীবনমান উন্নয়নে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর।
রংপুর নগরীর নূরপূরে তিন রুমের একটি ভাড়া বাড়িতে ২৪ জন হিজরার সাথে থাকেন নতুন। বাবা মায়ের দেয়া নাম আশিক হলেও দলে যুক্ত হবার পর গেল পাঁচ বছর ধরে নতুন নামেই এখন সে পরিচিত। ছেলে পরিচয়ে ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়ালেখা করলেও পরিবার আর প্রতিবেশীদের বঞ্চনার শিকার হয়ে বাধ্য হয়েছেন দলে যুক্ত হতে।
নতুনের মতো অন্য হিজরাদের গল্প প্রায় একই। সমাজের বাকা চাহনি আর লাঞ্ছনার শিকার হয়ে একসময় বাধ্য পরিবারের বন্ধন ছিন্ন করতে।
চাকরীর ক্ষেত্রে সরকারি কোটা না থাকা এবং দীর্ঘ সময়েও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়ায় অনেকেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষাবৃত্তিকেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
হিজরাদের একজন বলেন, "১০-৫ টাকা চাইলে অনেকেই বলেন তোমাদের ভাতা দিচ্ছে সরকার ভিক্ষা কর কেন? কিন্তু আমরা তো ভাতা পাচ্ছিনা। ভাতা পেলে কেউ একাজ করতো না।"
অন্য হিজরারা বলেন, "সরকারের কাছে একটাই দাবি যার যতটুকু যোগ্যতা আছে, যে যে কাজে দক্ষ তাকে সে যোগ্যতা থেকেই কর্মক্ষেত্রে একটা ব্যবস্থা করা হোক।পূর্ণবাসন ও কর্মসংস্থান হলে আমরাও ভিক্ষাবৃত্তি বের হয়ে আসবো। আপনারাও বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে চির মুক্তি পারেন।"
সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, 'সরকারের পক্ষ থেকে হিজরাদের পুনর্বাসন এবং দক্ষ জনবলে পরিণত করতে সব ধরণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নজিরহাটে ২ একর জায়গা অলরেডি রিকুজেসনের জন্য প্রস্তান প্রেরন করেছি।'
রংপুরে হিজরার সংখ্যা ৩শ৭০ জন। এদের মধ্যে মাত্র দুই জন বয়স্ক ভাতা আর ১২জন শিক্ষা ভাতা পান।