রংপুরের তারাগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে নিজ বাড়িতে হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রংপুরের তারাগঞ্জে সাবেক প্রধান শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭০) এবং তার স্ত্রী সুবর্ণা রায় (৬০) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অবশেষে একজনকে গ্রেপ্তার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ই ডিসেম্বর) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রাত ১টার দিকে আলমপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুর শেরমস্ত গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে মোরসালিন ইসলাম (২৫) নামে ওই যুবককে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মোরসালিন ওই গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। তিনি পেশায় টাইলস মিস্ত্রি এবং পাশাপাশি তারাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (১২ই ডিসেম্বর) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন, রংপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন।
এদিকে ডিবি পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে মোরসালিন বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্রের বাড়িতে টাইলস লাগানোর কাজ করছিলেন। কাজ করার সময় বাড়িতে প্রচুর টাকা-পয়সা আছে এমন ধারণা থেকেই তার মনে লোভ জাগে। সেই লোভ থেকেই তিনি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা নেন।
গত শনিবার রাত ১০টার দিকে নিজের বাড়ির একটি চায়নিজ কুড়াল হাতে নিয়ে তিনি যোগেশ চন্দ্রের বাড়ির পেছনের কাঁঠাল গাছ বেয়ে দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমে তিনি সুবর্ণা রায়কে এবং পরে যোগেশ চন্দ্র রায়কে কুপিয়ে হত্যা করেন।
ত্যাকাণ্ডের পর আলমারির তালা ভেঙে টাকা-পয়সা লুটের চেষ্টা চালান। কিন্তু ভেতরে কোনো টাকা না পেয়ে খালি হাতেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। ব্যবহৃত কুড়ালটি পাশের পুকুরে ফেলে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোরসালিন হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থার সংকট এবং ৮ হাজার টাকার ঋণ তাকে এই পথ বেছে নিতে প্ররোচিত করে বলে সে জানিয়েছে।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন মারুফ বলেন, গত ৬ই ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা দম্পতিকে কুড়াল দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে মোরসালিন। টাইলসের কাজ করতে গিয়ে বাড়িতে টাকার উপস্থিতি নিয়ে তার ভুল ধারণা তৈরি হয়। সেই লোভ আর ঋণের চাপ থেকেই সে হত্যার পরিকল্পনা করে।
তিনি আরও বলেন, হত্যার পর আলমারির তালা ভেঙে টাকা চুরি করতে গিয়ে কোনো অর্থ না পেয়ে সে হয়ে খালি হাতে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুকুরে ফেলা কুড়ালটিও উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে অনেক তথ্য এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে শিগগিরই বিস্তারিত জানানো হবে।
ডিবিসি/ এইচএপি