বড়ভাই জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারী, ছোট ভাই যুদ্ধাপরাধী এ টি এম আজহারুল ইসলামের জামাতা। বাবার নামও আছে রাজাকারের খসড়া তালিকায়।
সেই পরিবারের সন্তান সাজেদ ফাতেমীর দুটি গান স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষে শতগানের সংকলনে। এতে লালমনিরহাটে ফুঁসে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। যদিও সাজেদ ফাতেমীর দাবি তার বাবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন এবং তার অন্যান্য ভাইয়েরা আওয়ামী পন্থি।
নকশিকাঁথা ব্যান্ডের লিরিসিস্ট ও লিড ভোকাল সাজেদ ফাতেমির বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার নামুড়ি গ্রামে। তার দুটি লেখা গান জায়গা পেয়েছে শিল্পকলা একাডেমি প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর শতগানের সংকলনে।
মুক্তিযুদ্ধে তার পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধুর গানের সংকলনে ফাতেমির গান জায়গা পাওয়ায় ফুঁসে উঠেছেন এলাকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষেরা। তারা বলেন,'রাজাকার পুত্রের গান এখানে থাকবে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে এটি কারোই কাম্য নয়। কেমন করে সেখানে সংকলিত হয়েছে। আমরা লালমনিরহাটবাসী এর তীব্র নিন্দা জানাই।'
শনিবার লালমনিরহাটে মানববন্ধন করে ওই গান দুটি বাতিল করে পুনরায় সংকলন বের করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠন। এ সময় শিল্পকলা একাডেমির দায়িত্বশীলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। স্থানীয়রা জানান,'তাদের পরিবারের কেউ কোন দিন 'জয় বাংলা' বলেনি। শিল্পকলা একাডেমি দায়সারা কাজ করেছে।'
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শিল্পী সাজেদ ফাতেমী বলছেন, তার বাবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন এবং তিনিসহ অন্যান্য ভাইরাও বঙ্গবন্ধু প্রেমী। সাজেদ ফাতেমী আরও বলেন,'আমার বড় দুই ভাই কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা। আমার আব্বা মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু দুর্ভাগ্য কারোরই কোন সার্টিফিকেট নেই। শত শত মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিয়ে আব্বা সুস্থ করেছেন।'
তবে এ দাবি নাকচ করে গান দুটি বাতিলের সুপারিশ করার কথা জানালেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান জানান,'সাজেদ ফাতেমীর বাবা এবং চাচা দুজনই রাজাকার ছিলেন। সে কোন দিন মুক্তিযোদ্ধা ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেও ছিল না।'
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সমুন্নত রাখতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনকে ঘিরে যেন কোনো কলংকিত অধ্যায় রচিত না হয় সেজন্য সরকার সবদিকে নজর রাখবে বলে আশা সবার।