বাংলাদেশের পাবনা জেলার আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সোহেলকে গভীর রাতে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার রানীতলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রানীতলা থানার পুলিশ হরিরামপুর ঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে আটক করে। গত সোমবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, ৪৫ বছর বয়সী নজরুল ইসলাম সোহেল পাবনা সদর থানার কাছারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশের সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জেলা পরিষদের নেতা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল ইসলাম সোহেল পুলিশকে জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ই আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি তার গোপন ঠিকানা অভ্যুত্থানকারীদের নজরে আসে এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। জীবন বাঁচাতে তিনি রাতের আঁধারে ভারতে পালিয়ে আসেন। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে তিনি প্রতিহিংসার শিকার। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে তার ওপর হামলা, নিপীড়ন, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, শারীরিক নিগ্রহ এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
সোহেল পুলিশের কাছে দাবি করেন, "আমি এলাকায় থাকলে মেরে ফেলা হতো। শেখ হাসিনা যেহেতু ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, আমিও সেই পথেই এসেছি নিজের প্রাণ বাঁচাতে।" তিনি আরও জানান, ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণই ছিল তার অনুপ্রবেশের মূল উদ্দেশ্য।
বিএসএফের গুলির মুখেও সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পৌঁছানোর পর শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। রানীতলা থানার ওসি অর্জিত ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এই অভিযান চালায়।
এই ঘটনায় সীমান্ত জুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে তৎপরতা বেড়েছে। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের এভাবে অনুপ্রবেশ প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। জানা গেছে, গোয়েন্দা বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাও ইতিমধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করেছে। গ্রেপ্তারকৃত সোহেলের বিরুদ্ধে ১৪ ফরেনার্স আইন, পাসপোর্ট আইন সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রানীতলা থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোহেলকে মঙ্গলবার লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
ডিবিসি/কেএলডি