ঢাকার উপকণ্ঠে সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজারের বেশি শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র ৯৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে কেটে গেছে ১২টি বছর।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪শে এপ্রিল) রানা প্লাজা ধসের এক যুগ পূর্ণ হলো। কবে নাগাদ বিচারকাজ শেষ হতে পারে, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেননি ঢাকার জেলা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ইকবাল হোসেন। মূলত ঐদিন শ্রমিকরা কাজ শুরুর পরপরই বিকট শব্দে ধসে পড়ে আট তলার একটি বাণিজ্যিক ভবন। সেই কংক্রিটে চাপা পড়ে হাজারো প্রাণ। মুহুর্তেই তছনছ হয় সাজানো গোছানো সোনার সংসার।
দগদগে ক্ষতের দুঃসহ স্মৃতি নিয়েই আজও ন্যায়বিচার আর ক্ষতিপূরণের আশায় দিন গুনছেন শ্রমিকরা। এখনো ঘুরে ফিরে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তাড়া করে ফিরছে তাদের। আদৌ কি বিচার হবে এই ট্রাজেডির এবং কারখানায় নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতির কতটুকুইবা নিশ্চিত করেছে মালিকরা, এসব প্রশ্ন তাদের মাথায় এখনও ঘুরপাক খাচ্ছে।
কারখানার দেয়ালে ফাটল দেখা যাওয়ায় যে কোন সময়ে দুর্ঘটনার ভয় তাড়া করে ফিরছলো অনেককে। তবুও জীবন ও জীবিকার তাগিদে সেদিন কাজে যেতে বাধ্য হয়েছিল তাদের।
অঙ্গহানি আর চিরস্থায়ী ট্রমার সাথে লড়াকু মানুষগুলোর সাথে স্মৃতি হাতরে ফেরেন সেদিনের উদ্ধার কাজে নিয়োজিতরাও। শ্রমিক নেতাদের দাবি, ক্ষতিপূরণের অর্থের হয়েছে নয়-ছয়।
সে ঘটনায় করা ১১টি মামলার একটিও আলোর মুখ দেখেনি আজও। কেউ খোঁজ নেননি, এমন চাপা ক্ষোভ আর অভিযোগ-অনুযোগের আছে পোশাক খাতের সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে। বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ সারা হোসেন তাগিদ দেন সমন্বিত উদ্যোগের।
রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপের ধুলা হয়তো এখন বাতাসে নেই, কিন্তু দগদগে ক্ষতের দুঃসহ স্মৃতি আজো বয়ে বেড়াচ্ছেন তাদের অনেকেই।
ডিবিসি/রাসেল