রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি যেকোন সময় কার্যকর হতে পারে।
আজ মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে জাহাঙ্গীরের স্বজনরা কারাগারে শেষ দেখা করেছেন। তবে অপর আসামি মহিউদ্দীনের পরিবারের কেউ দেখা করতে আসেননি।
জানা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার অবেদন করেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি তাদের আবেদন নাকচ করে দেন। আবেদন নাকচের চিঠি গত ৫ জুন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এসে পৌঁছায়। কারা বিধান অনুযায়ী প্রাণভিক্ষা নাকচের চিঠি কারা কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছার ২১ দিন পর এবং ২৮ দিনের মধ্যে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করতে হয়। সে অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।
এছাড়া মৃত্যুদণ্ড স্থগিত চেয়ে আসামি জাহাঙ্গীর আলমের ভাইয়ের করা সর্বশেষ আবেদন আজ ২৫ জুলাই খারিজ করে দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ফলে ফাঁসি কার্যকরের আর কোন বাধা থাকছে না।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার নিজাম উদ্দীন হিরো বলেন, ‘এ মাসের মধ্যেই যেকোন সময় ফাঁসি কার্যকর করা হবে। আইনগত আর কোন বাধা নাই।’
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, ‘ফাঁসি কার্যকর কখন হবে এ বিষয়ে এখনো কোন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে কারা কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি নিয়ে আমাকে অবগত করবে।’
নিহত প্রফেসর ড. এস তাহের আহমেদের কন্যা হাইকোর্টের আইনজীবী সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ বলেন, ‘এই রায় কার্যকর হতে আর কোন বাধা নেই। আমরা চাই দ্রুত রায় কার্যকর করা হোক।’
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাবির শিক্ষকদের আবাসিক কোয়াটারের বাসা থেকে নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের। ২ ফেব্রুয়ারি বাসাটির পেছনের ম্যানহোল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ নগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতে তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
হত্যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, একই বিভাগে অ্যাকাডেমিক কমিটির প্রধান ড. তাহের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনকে অধ্যাপক পদে উত্তীর্ণ হবার সুপারিশ না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ মোট চারজন মিলে বাসার পেছনে ম্যানহোলে ঢুকিয়ে রাখে।
২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক ৪ জনকে ফাঁসি ও দুজনকে খালাস দেন। দণ্ডিত অন্যরা হলেন- জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল ও শ্যালক সালাম। মামলায় তৎকালীন রাবি শিবির সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী খালাস পান । পরে উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে নাজমুল এবং সালামের ফাঁসির রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা করা হয়।
ডিবিসি/কেএমএল