রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা অ্যারোফ্লট সোমবার আচমকা ৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়। ‘সাইলেন্ট ক্রো’ নামে একটি ইউক্রেন-পন্থী হ্যাকার গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠানটির ওপর সাইবার হামলায় চালিয়েছে বলে দায় স্বীকার করে নেয়। আর তারপরই ফ্লাট সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি।
‘সাইলেন্ট ক্রো’ নামে হ্যাকার গোষ্ঠীটি বেলারুশের ‘সাইবার পার্টিজানস’ নামে আরেকটি গোষ্ঠীর সাথে মিলে এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, এটি ইউক্রেন যুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত একটি অভিযান। ‘গ্লোরি টু ইউক্রেন! লং লিভ বেলারুশ!’ স্লোগান দিয়ে তারা হুমকি দিয়েছে যে, খুব শীঘ্রই অ্যারোফ্লটে ভ্রমণকারী সমস্ত রাশিয়ান যাত্রীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করা শুরু করবে।
এমন হুমকির মুখে পড়ে জাতীয় বিমান সংস্থাটি তাদের কয়েক ডজন ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়। ফলে মস্কোর শেরেমেতিয়েভো বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ছুটির মৌসুমে এই অচলাবস্থার কারণে যাত্রীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মস্কো বিমানবন্দরের ডিপারচার বোর্ডগুলো বাতিল হওয়া ফ্লাইটের লাল বিজ্ঞপ্তিতে ভরে গেছে। অ্যারোফ্লট সরাসরি হ্যাকিংয়ের বিষয়টি স্বীকার না করলেও, ক্রেমলিন এবং রাশিয়ার আইনজীবীরা এটিকে সাইবার হামলা হিসেবেই চিহ্নিত করে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং জানিয়েছেন, হ্যাকারদের হুমকি রাশিয়ার সমস্ত বড় কোম্পানির জন্য একটি চলমান বিপদ।
অ্যারোফ্লট জানিয়েছে, বাতিল হওয়া ফ্লাইটের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ, তবে মিনস্ক (বেলারুশ) ও ইয়েরেভান (আর্মেনিয়া) যাওয়ার ফ্লাইটও ছিল তালিকায়। আরও অন্তত ১০টি ফ্লাইট দেরিতে ছেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাত্রীরা পর্যাপ্ত তথ্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের টিকিটের সম্পূর্ণ মূল্য ফেরত বা আগামী ১০ দিনের মধ্যে অন্য ফ্লাইটে পুনরায় বুকিং দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি।
যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অ্যারোফ্লট এখনো বিশ্বের শীর্ষ ২০টি এয়ারলাইনের একটি, যেটি ২০২৪ সালে ৫৫.৩ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করেছে। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ায় ড্রোন হামলার জেরে ফ্লাইট বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়, তবে এত বড় মাপের সাইবার হামলা দেশটির বিমান পরিবহন খাতে একটি নতুন এবং গুরুতর সংকট তৈরি করেছে।
ডিবিসি/এফএইচআর