যাদের অবহেলায় চুরি হয়েছিলো রিজার্ভ, তাদের হাতেই আবার তুলে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সংশ্লিষ্টরা এমন অভিযোগ তুলেছেন।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৪ তারিখ, পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে চুরি হয় রিজার্ভের অর্থ। আর বুঝে হোক অথবা না বুঝে হোক হ্যাকারদের চুরির সুযোগ করে দিয়েছিল সে সময়ের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা দিপঙ্কর কুমার চৌধুরী।
দেশের অর্থ খোয়ানোর অপরাধে যাদের সাজা হওয়ার কথা ছিলো, তারাই এখন বসেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি বিভাগ, ব্যাংক সুপারভিশন ও মানবসম্পদসহ স্পর্শকাতর বিভাগের শীর্ষ পদে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুষ্কৃতকারীদের এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া দুঃখজনক। আর এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র।
আরেক কর্মকর্তা মেজবাউল হক, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, রিজার্ভ চুরির ঘটনার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত না করে গোপনে বিদেশি দুটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংকের সুরক্ষিত আইটি রুমে নিয়ে আলামত নষ্ট করানোর।এছাড়াও তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় নাম আসে সাবেক কর্মকর্তা শুভঙ্কর সাহা, এস এম রেজাউল করিম, জিএম আব্দুল্লাহ সালেহীন, শেখ রিয়াজউদ্দিন, একলাস উদ্দিনসহ সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানের।
এদিকে, একই ঘটনায় জড়িত প্রমান হওয়ায় সাজা হয় ফিলিপাইনের ব্যাংক আরসিবিসি’র তৎকালীন ম্যানেজার মায়া দেগুইতো’র। আতিউর রহমান মেয়াদ পূর্তির আগেই চাকরি হারালেও বাকিদের অনেকেই বিদায় নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরির সব সুযোগ সুবিধা নিয়েই। আর সে সময়ে এই অপরাধে বাকি যারা জড়িত ছিলেন তারাই আবার এখন বহাল হয়েছেন আরও গুরুত্বপূর্ণ পদে। নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক রয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ ৯টি বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে। আর যার অবহেলায় চুরি গেল রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার সেই দিপঙ্কর চৌধুরী পদোন্নতি পেয়ে এখনো বহাল তবিয়তে ব্যাংকের আইটি বিভাগে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ন্যাক্কারজনক ঘটনার যারা জন্ম দিয়েছিলো, তাদের ওপরই অন্তর্বর্তী সরকারের আস্থা রাখার ঘটনা দুঃখজনক। তাই বির্তকিত এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও আছে।
ডিবিসি/রাসেল