লন্ডনে ফিলিস্তিনপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ 'প্যালেস্টাইন অ্যাকশন'-এর সমর্থনে আয়োজিত একটি বিক্ষোভ থেকে অন্তত ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ব্রিটিশ সরকার গত মাসে এই দলটিকে 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। শনিবার (৯ই আগস্ট) লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, একটি নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন করার অভিযোগে এই বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবাদ আইন ২০০০ অনুযায়ী, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সদস্য হওয়া বা একে সমর্থন করা এখন একটি ফৌজদারি অপরাধ, যার জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
সমালোচকরা বলছেন, সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা মূলত মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমাবেশের অধিকারকে দমন করার একটি প্রচেষ্টা, যার মূল লক্ষ্য ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্তব্ধ করা। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধুমাত্র 'প্যালেস্টাইন অ্যাকশন-কে সমর্থন করি' লেখা টি-শার্ট পরা বা প্ল্যাকার্ড বহন করার জন্যও অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৫০ জনেরও বেশি শিক্ষাবিদ একটি খোলা চিঠিতে এই নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছেন। চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ছিলেন ইসরায়েলি ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ইলান পাপে এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মাইকেল হার্ডট। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকেও শুধুমাত্র প্ল্যাকার্ড বহন করার জন্য শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা করে বলেছে, এটি মত প্রকাশ ও সমাবেশের স্বাধীনতার অধিকার রক্ষায় যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার লঙ্ঘন।
প্যালেস্টাইন অ্যাকশন যুক্তরাজ্যে ইসরায়েল-সম্পর্কিত সংস্থাগুলোকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছে। তাদের অভিযোগ, গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধে ব্রিটিশ সরকার জড়িত। গত জুনে একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে ঢুকে দুটি এয়ারবাস ভয়েজার বিমান ক্ষতিগ্রস্ত করার পরেই ব্রিটিশ সরকার এই দলটিকে নিষিদ্ধ করে। প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের দাবি, ওই বিমানগুলো ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানকে জ্বালানি সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত হয়।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা
ডিবিসি/এমএআর