লালমনিরহাটের পাটগ্রামে পথরোধ করে মোবাইল ফোন ও দোকানের চাবি ছিনিয়ে নিয়ে ই-ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে অভিনব কায়দায় টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক প্রধান সমন্বয়ক গোলাম আজম এবং তার সহযোগী শাহাদত হোসেন মারুফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার (২২শে আগস্ট) দুপুরে তাদের কঠোর পুলিশি নিরাপত্তায় লালমনিরহাট আদালতে পাঠানো হয়।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার (২১শে আগস্ট) গভীর রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ১২ই আগস্ট রাতে। উপজেলার মধ্যবাজারের ইশা জুয়েলার্সের মালিক ইয়াছিন আলী এবং তার বন্ধু শুভ জুয়েলার্সের মালিক শুভ শর্মা বকেয়া টাকা আদায় করে ফিরছিলেন। ফেরার পথে রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির কারণে আটকা পড়লে শাহাদত হোসেন মারুফ ও সাগর হোসেনসহ কয়েকজন তাদের পথরোধ করে। এসময় ইয়াছিন আলী কোনোভাবে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও শুভ শর্মাকে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে শুভর মোবাইল ফোন এবং তার জুয়েলারি দোকানের চাবি কেড়ে নেয়।
এর পরদিন সন্ধ্যায় মামলার প্রধান আসামি মামুন হোসেন শুভর কাছে তার মোবাইল ও দোকানের চাবি ফিরিয়ে দেন এবং এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি বা কোনো ধরনের অভিযোগ না করার জন্য হুমকি দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় এবং হুমকির ভয়ে শুভ শর্মা চুপ ছিলেন। কিন্তু পাঁচ দিন পর নিজের রুপালী ব্যাংক শাখায় টাকা তুলতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন যে তার অ্যাকাউন্টে থাকা ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯২০ টাকার মধ্যে এখন মাত্র ৫ হাজার ৪২২ টাকা অবশিষ্ট আছে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে শুভ জানতে পারেন, তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ই-ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে গত ১৩ই আগস্ট তিন দফায় মোট ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৮ টাকা দুটি ভিন্ন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৯৮ টাকা এবং অন্যটিতে ৬৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়। অধিকতর অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই টাকা মতিউর রহমান এবং গোলাম আজম নামের দুই ব্যক্তি তুলে নিয়েছেন।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শুভ শর্মা শুক্রবার (২২শে আগস্ট) ভোররাতে পাটগ্রাম থানায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি মিজানুর রহমান বলেন, পথরোধ, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং মোবাইল ও চাবি কেড়ে নিয়ে ই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এজাহারের ভিত্তিতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ডিবিসি/এএমটি