স্বাস্থ্য

লো প্রেশারের লক্ষণ ও প্রতিরোধে যেসব খাবার খেতে হবে

স্বাস্থ্য ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৩:৫০:৩৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

আমাদের শরীরে নানা রকম রোগ বালাই ও সমস্যা দেখা দেয়। কিছু বড় ধরনের রোগ বালাই ও সমস্যা এড়ানো যায় ভালো খাদ্য অভ্যাসের মাধ্যমে। যেমন যদি ভালো খাদ্য অভ্যাস ও সতর্ক থাকেন তাহলে নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

এ বিষয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার তারেক আহমেদ চৌধুরী বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন গণমাধ্যমে। আসুন জেনে নেয়া যাক লো প্রেশারের লক্ষণ, কী কী খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।

আমাদের কাছে খুবই পরিচিত শব্দ নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেশারের আরেকটি নাম হাইপোটেনশন। হাই ব্লাড প্রেশার যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনই লো ব্লাড প্রেশারও ক্ষতির কারণ হতে পারে।

লো প্রেশার কী বিষয়ে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মু. সালাউদ্দিন বলেন, সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মি. মি. মার্কারি ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মি. মি. মার্কারির নিচে হলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়। প্রেশার যদি খুব বেশি নেমে যায় তাহলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃৎপিণ্ডে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে অসুস্থতা দেখা দেয়। তাই প্রেশার লো হলে বাড়িতেই প্রাথমিক কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আমাদের শরীরের জন্য উচ্চ রক্তচাপের মতো নিম্ন রক্তচাপ অর্থাৎ লো ব্লাড প্রেশারও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকে লো ব্লাড প্রেশার হতে পারে।

লো ব্লাড প্রেশারের কারণ ও লক্ষণ: লোপ্রেশার বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি উচ্চ রক্তচাপের মতো কোনো রোগ নয়। অনেকের প্রায় সময়ই রক্তচাপের মাত্রা কম থাকে। এটা হতে পারে হরমোনজনিত কারণে। আবার কারো কারো দেখা যায় হঠাৎ করেই রক্তচাপ কমে যায়। বিভিন্ন অসুস্থতাজনিত কারণে এটা হতে পারে। আবার ব্যায়াম, ক্লান্তির কাজ এবং ঠিকমত না খেলেও রক্তচাপ কমে যেতে পারে। তাই লো প্রেশার কেন হল সেটা আগে বুঝতে হবে।

লো প্রেশার হলে মাথা ঘোরা, বমিভাব, অজ্ঞান হওয়া, মাথাব্যথা, ক্লান্তভাব এরকম কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে লো  প্রেশারের সমস্যা থাকলে পরে এটি জটিল রোগের সৃষ্টি করে। এটি যেকোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে।

লো ব্লাড প্রেশারে যেসব খাবার খেতে হবে: যাদের রক্তচাপ প্রায় সময় কম থাকে এবং কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের কারণে লো ব্লাড প্রেশার হয় তারা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু নির্দিষ্ট খাবার রাখতে পারেন। এতে ধীরে ধীরে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসবে।

আয়রন, ভিটামিন সি, বি ১২, ও ফলেট শরীরের রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। এই সব খাদ্য উপাদানগুলো যে খাদ্যের মধ্যে পাওয়া যায় সেসব খাদ্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।


ডিম হাইপোটেনশনের রোগীদের জন্য উপযোগী খাদ্য। ডিমকে আদর্শ খাদ্যও বলা হয়। ডিমে আছে ভিটামিন বি ১২, যা রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।

 

প্রতিদিন তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। স্যুপ, কফি, ফলের রস, দুধ, শরবত ইত্যাদি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।

 

টক জাতীয় ফলে থাকে ভিটামিন সি। এ ছাড়াও পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা সোডিয়ামের কার্যকারিতা ঠিক রাখে। তাই লেবু, মালটা, কমলা জাতীয় ফল প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।  

 

গরু, মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, ডাল, লাল শাক, পালং শাক, কচু শাক, সিমের বিচি, মিষ্টি কুমড়ার বিচি ও শুকনা ফল আয়রনের ভালো উৎস। এ ছাড়া এতে সোডিয়াম ভালো পরিমাণে থাকে।

 

ডাবের পানিতে থাকে সোডিয়াম, যা রক্তচাপ বাড়ায়। তাই ডাবের পানি খাওয়া ভালো।
যাদের ব্লাড প্রেশার একদম লো থাকে তারা ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। এটি রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।

 

অসুস্থতাজনিত কারণে যেমন জ্বর, ডায়রিয়া ইত্যাদি কারণে প্রেশার কমে যেতে পারে। এ সময়ে তাৎক্ষণিক যেসব খাবার দিলে উপকার পাওয়া যেতে পারে:

স্যালাইন প্রেশার বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্যালাইন খেলে তাৎক্ষণিক প্রেশার বাড়তে থাকে। এ ছাড়া লবণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে হালকা একটু চিনি যোগ করে খাওয়ানো যেতে পারে। আঙ্গুরের রসও প্রেশার বাড়ানোর জন্য খুবই উপকারী। লবণযুক্ত খাবার যেমন চিপস, স্যুপ খাওয়ানো যেতে পারে।

 

ডিবিসি/কেএলডি

আরও পড়ুন