আমাদের এই এশিয়া মহাদেশে রুটি একটি খুবই জনপ্রিয় খাবার। কোনো কোনো দেশে তো এটি জাতীয় খাবার হিসেবেও খাওয়া হয়ে থাকে। তবে, অনেক সময় দেখা যায়, সব পদ রান্নায় তুখর হলেও কিছুতেই আয়ত্তে আসতে চায় না এই রুটি। কারও ক্ষেত্রে রুটি হয়ে যায় পাঁপড়ের মতো, আবার কারও রুটি হয়ে যায় শক্ত ইঁট। আবার অনেকের সব ঠিক থাকলেও রুটি মোটে ফুলতে চায় না।
আপনিও যদি সেই দলে পড়েন, তাহলে টিপসগুলো দেখে নিন।
দেখা যায় ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, কন্টিনেন্টাল খাবার তৈরি করতে গিয়ে এতটা ঝক্কি পোহাতে হয় না, যতটা পোহাতে হয় রুটি তৈরি করতে। রুটি বানানোর সময় মাথার ঘাম পায়ে পড়েনি এমন মানুষের সংখ্যা অনেক কম।
এমনিতেই শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষজ্ঞরা রুটি খাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে যদি রুটি শক্ত থাকে, তাহলে তো খাওয়াটাই মাটি হয়ে যায়। তাই রুটি তৈরির সময় কিভাবে আটা মাখা উচিত, তা জানতে হবে সঠিক উপায়ে। ময়দার রুটি এড়িয়ে আটার তৈরি রুটি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তাতে শরীর থাকবে চাঙ্গা ও সুস্থ্য।
আটা মাখবেন যেভাবে:
ভুষিযুক্ত আটার রুটি খাওয়ার চেষ্টা করুন। ভুষিযুক্ত আটায় ফাইবার থাকে বেশি পরিমাণে। আটা মাখার সময় এক চিমটে নুন দিয়ে দিন। পারলে সামান্য পরিমাণে সাদা তেলও দিতে পারেন। তবে চেষ্টা করবেন, আটা যেন হালকা উষ্ণ গরম পানি দিয়ে মাখা হয়। গরম পানিতে আটা মাখলে রুটি যেমন নরম হয়, তেমনই সহজে হজমও করা যায়।
আটার ‘ডো’ যেন শক্ত না হয়:
আটা খুব বেশি শক্ত করে মাখবেন না। আবার এমনও যেন না হয়, একেবারেই নরম হয়ে গেল। মাঝারি রাখুন। মাখা ভালো হয়েছে কিনা বুঝবেন কিভাবে ভাবছেন? আটা মাখার পর তা যদি আঙুলে একটুও জড়িয়ে না যায়। তাহলে জানবেন সব ঠিকঠাক আছে।
আটা মাখার পর সঙ্গে সঙ্গে রুটি বানাবেন না
আটা মাখার পর অন্তত মিনিট ১৫ ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। খুব বেশি হলে ৩০ মিনিট রাখতে পারেন। তার বেশি রাখলে কিন্তু মাখা আটা একেবারেই নরম হয়ে যাবে। তখন আবার বেলতে সমস্যা হবে।
প্রশ্ন হল রুটি কেন শক্ত হয়?
আটার মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, অ্যালবুমিন, ডায়েটারি ফাইবার এবং স্টার্চ থাকে। আটা মাখার সময় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ জল ব্যবহার করা হয়। রুটি সেঁকার সময় জল ও আটার মধ্যে থাকা এই উপাদানগুলি একসঙ্গে মিশে গিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু করে। এই বিক্রিয়ার ফলে ডেক্সট্রিন নামে এক ধরনের স্টার্চ তৈরি হয়, যা বেশিক্ষণ রুটিকে নরম থাকতে দেয় না। তাই অনেক সময় রন্ধন শিল্পীরা হালকা উষ্ণ দুধ বা পানিতে আটা মাখার পরামর্শ দেন।
রুটি তৈরির পর মেনে চলুন এই টিপসগুলি
১. রুটি সেঁকা হয়ে গেলে তাওয়ায় সামান্য পানি দিয়ে দিন। রুটিগুলো তৈরি করার পর একবার ভিজিয়েই উঠিয়ে নিতে পারেন। এরপর হটপটে রাখুন। এতে রুটি অনেকক্ষণ পর্যন্ত নরম থাকবে।
২. এছাড়াও রুটি তৈরির পর ভেজা কাপড়ে জড়িয়ে রাখতে পারেন। তাতে রুটি অনেকক্ষণ নরম থাকবে।
৩. রুটি তৈরির পর মাখন অথবা ঘি দিয়ে দিতে পারেন। তাহলে রুটির স্বাদ তো বাড়বেই, সেই সঙ্গে অনেকক্ষণ নরমও থাকবে।
৪. অফিসের লাঞ্চে রুটি নিয়ে গেলে গরম রুটি সঙ্গে সঙ্গেই ফয়েল প্যাকে মুড়ে ফেলুন। এতে দীর্ঘক্ষণ নরম থাকবে।