নিজের জীবনের বিনিময়ে ২০ ছাত্রকে বাঁচিয়ে বীরের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে তার পরিবার ও স্থানীয়রা। ভয়াবহ এক অগ্নি দুর্ঘটনায় নিজের জীবন উৎসর্গ করে তিনি বাঁচিয়েছিলেন ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ। এই মহীয়সী শিক্ষিকার নিষ্প্রাণ দেহ নীলফামারীতে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে শায়িত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার দিন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি দোতলা ভবনে শিক্ষার্থীরা আটকা পড়লে আগুনের তীব্র তাপ উপেক্ষা করে তাদের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েন শিক্ষিকা মাহেরীন। 'আমি আছি, তোমরা ভয় পেয়ো না', এই অভয়বাণী দিয়ে তিনি একে একে ২০ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন। তবে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে তার শরীরের শতভাগই দগ্ধ হয়েছিল। আগুনে তার শ্বাসনালি পুরোপুরি পুড়ে যায়। দগ্ধ অবস্থায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার পর সোমবার রাত ৯টার কিছু আগে আইসিউতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মমতাময়ী এই শিক্ষিকা।
স্ত্রীকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ মাহেরীনের স্বামী মনসুর হেলাল। তিনি তাদের দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। নিজের জীবন ও প্রিয় সন্তানের মুখের চেয়েও ছাত্রদের বিপন্নতাকে বড় করে দেখেছিলেন মাহেরীন চৌধুরী। তার এই ত্যাগকে মহাকাব্যিক উল্লেখ করে চতুর্দিক থেকে তাকে রাষ্ট্রীয় বীরের মর্যাদা দেয়ার দাবি উঠেছে।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল নীলফামারীতে মাহেরীনের কবরে শ্রদ্ধা জানায়। এ সময় বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এমন আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
ডিবিসি/এফএইচআর