প্রাথমিক স্তরে দরিদ্র পরিবারের শিশুদের স্কুলমুখী করতে ২০০১ সালে স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর সাফল্যও আসে অনেক। তবে চলতি বছরের জুন থেকে বন্ধ হয়ে যায় এই কার্যক্রম।
রংপুর বিভাগের অন্তত ১১ লাখ শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিংয়ের সুবিধা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। কার্যক্রম আবার চালু না হলে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার বাড়বে বলে আশঙ্কা শিক্ষকদের।
সরকার ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহায়তায় 'স্কুল ফিডিং' প্রকল্পের আওতায় রংপুর বিভাগের ২৫টি উপজেলার ৪ হাজার ৬শ'১৮ টি স্কুলের প্রায় ১১ লাখ শিশুকে প্রতিদিন টিফিন হিসেবে বিস্কুট দেয়া হতো।
শুরু থেকে রংপুর বিভাগের চরাঞ্চলবেষ্টিত উপজেলা ছাড়াও দারিদ্রপীড়িত উপজেলাগুলোর প্রাথমিক স্তরের শিশুরা এই কার্যক্রমের আওতায় আসে। এতে নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশুরা আগ্রহী হয় স্কুলমুখী হতে। তবে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এবং সরকারের নানামুখী সিদ্ধান্তের কারণে গেল কয়েক মাস ধরে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত বিভাগের কয়েক লাখ শিশু।
শিশু শিক্ষার্থীরা জানায়, আগে আমরা স্কুলে আসলে আমাদের বিস্কুট ও অন্যান্য অনেক খাবার দেয়া হতো। আমরা টিফিনে সেগুলো খেতাম।
স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, ফিডিং বন্ধ হয়ে গেলে একদিকে যেমন ঝড়ে পড়ার হার বাড়বে অন্যদিকে, স্কুলে আসতেও আগ্রহ হারাবে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরা জানায়, এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষই চরের দিনমজুর। তাদের সন্তানদের পুষ্টির চাহিদা এই বিস্কুট পূরণ করতো। এতে আবারও তাদের পুষ্টির চাহিদা দেখা দিবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাড়তে পারে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, আমরা এই প্রকল্প আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত করার একটা প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা আশা করছি কর্তৃপক্ষ এটি বিবেচনা করে আবারও এই প্রকল্পটি শুরু করবে। এতে করে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাবে এবং তাদের যে পুষ্টির চাহিদা তা পূরণ হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক জরিপে দেখা গেছে মাত্র ৬ শতাংশ অংশীজন উপবৃত্তি চেয়েছে, বাকি ৯৪ শতাংশই ফিডিংয়ের পক্ষে মত দিয়েছে।