এলাকার ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে একসময় পুরোদস্তুর চাঁদাবাজ হয়ে যান।
ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাইয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসী জিসানকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর যে ২৩ জন ‘শীর্ষ সন্ত্রাসীর’ তালিকা করেছিল, সেই তালিকায় জিসানের নামও ছিল। এই পলাতক আসামিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল।
গত শতকের শেষ এবং এ শতকের শুরুর দিকের বছরগুলোতে ঢাকার মতিঝিল, মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান, বনানীর ব্যবসায়ীদের কাছে জিসান ছিলেন আতঙ্কের নাম। তার চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির নানা গল্প সে সময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরত।
জিসান বেড়ে ওঠে ঢাকার রামপুরায়। এলাকার ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে একসময় পুরোদস্তুর চাঁদাবাজ হয়ে যান। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে খিলগাঁও এলাকার সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে মিশে সন্ত্রাসী জগতে জড়িয়ে পড়েন।
২০০৩ সালের ১৪ মে ঢাকার মালিবাগে একটি হোটেলে জিসানকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানে গিয়ে গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। ওই হত্যাকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
২০১২ সালে টেন্ডারবাজি নিয়ে মগবাজারে তিনজনকে খুন করে জিসানের লোকেরা।
রাজউকের টেন্ডার থেকে শুরু করে রেলভবন, গণপূর্ত, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার বিভিন্ন অঞ্চলের টেন্ডারের নিয়ন্ত্রণ নিতে জিসানকে ব্যবহার করেন শামীম। জিসানের হয়ে ফ্রিডম মানিক ও আইমান টিটু সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে জি কে শামীমের।
গত বুধবার রাতে জিসানকে দুবাইয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) মহিউল ইসলাম বলেন, ‘ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুবাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ করছে। তারা জানিয়েছেন, জিসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গ্রেপ্তারের পর দেখা যায়, জিসানের হাতে ভারতীয় পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এতদিন দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন। জিসানকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ভারত ও থাইল্যান্ড ছাড়া আর কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। তবে দুবাইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট বা এমএলএর মাধ্যমে জিসানকে ফিরিয়ে আনা যাবে।