মানবদেহের প্রতিটা অঙ্গের মতো ফুসফুসের গুরুত্ব অত্যাধিক। এই অঙ্গের খেয়াল না রাখলেই পড়তে হয় বিপদে। আর এজন্য দায়ি আমাদেরই তৈরি কিছু ভুল-ভ্রান্তির, যা এই অঙ্গের উপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। তখনই দেখা দেয় শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা।
তবে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করে নিজের প্রেশার বাড়িয়ে নেবার দরকার নেই। বরং ঘরোয়া কিছু আয়ুর্বেদের টোটকার মাধ্যমে সারিয়ে ফেলুন এই রোগ।
আজকাল বায়ু দূষণ হচ্ছে এই শ্বাসকষ্টের মূল মাথাব্যথা। অপরদিকে করোনা, কমন ফ্লুর কথা ভুলে গেলেও চলবে না। এছাড়া সিওপিডি ও অ্যাজমার মতো রোগও কিন্তু বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই রোগে আক্রান্তদের শ্বাস নিতে ব্যাপক সমস্যা হয়। তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার ফুসফুসের খেয়াল রাখার কথা বলেন।
তবে চলুন দেখে নেই কি কি টোটকা অবলম্বন করলে এই রোগ থেকে সহজে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব।
তুলসী পাতা ফুসফুসের নোংরা বের করে দেয়
তুলসী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশে আয়ুর্বেদে ব্যবহার হয়ে আসছে। এই পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, জিঙ্ক। এই উপাদানগুলোর সমন্বয়ে তুলসী ইমিউনিটি বাড়ানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তুলসীর অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান গুণ রয়েছে। এই উপাদানগুলো কিন্তু সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইতে সাহায্য করে। তাই ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কাশি ও সর্দি থেকে অনায়াসে দূরে থাকা যায়।
মুলেঠি কার্যকরী
প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্র আয়ুর্বেদে যুগের পর যুগ ধরে মুলেঠি ব্যবহার হয়ে আসছে। মুলেঠি কিন্তু ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে কার্যকরী। এমনকি এই ভেষজ পুরনো কঠিন রোগব্যাধি সারিয়ে ফেলতে পারে। এতে রয়েছে গ্লাইসারিজিন। এই উপাদান শরীরকে ইনফেকশনের হাত থেকে বাঁচায়। তাই এই ভেষজ খান।
ফুসফুসের জন্য উপকারী পিপুল
একটা সময় বাঙালি বাড়িতে এই ভেষজ পাওয়া যেত অনায়াসে। কিন্তু এখন সেসব অতীত। আয়ুর্বেদ জানাচ্ছে, পিপুল ফুসফুসের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে পিপেরাইন। এই উপাদানটি ইনফেকশন দূর করে। এমনকি কফ বের করতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে মধুর সঙ্গে পিপুল মিশিয়ে খেতে পারেন। এর মাধ্যমে ভালো ফলাফল পাবেন।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কালমেঘ রাখুন
কালমেঘ পাতার স্বাদ তিতো। তাই অনেকেই এই পাতা পছন্দ করেন না। তবে এতে রয়েছে হাজারও গুণ। এই পাতায় মজুত থাকে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। তাই সাধারণ সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া দূর করে দেয় এই পাতা। প্রতিদিন এই পাতার রস করে খেতে পারেন। আবার চাইলে খাওয়া যায় কাঁচাও।
বাসক পাতাতে দূর হবে সমস্যা
বাসক পাতা আয়ুর্বেদে বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে। বহু রোগে এই পাতাকে ‘ধন্বন্তরি’ বলে জানিয়েছে প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্র। এই পাতা নিয়মিত খেলে ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করতে পারে। ফুসফুসে থাকা ময়লা বেরিয়ে যায়। তাই ব্রঙ্কাইটিস, টিবির মতো অসুখে এই পাতা খেতে বলা হয়। ফলে এমন সমস্যায় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার আগে এই ঘরোয়া উপায় মেনে চলুন। কিছুদিনেই তফাত বুঝতে পারবেন।