বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারে নতুন পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পর দেশের রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় সংসদের একটি ভবিষ্যৎ দ্বি-কক্ষ ব্যবস্থার (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) সদস্যদের গোপন ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১শে জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের দ্বিতীয় ধাপের ২৩তম দিনে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দুপুরের বিরতির পর কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করা হলে উপস্থিত দলগুলোর প্রতিনিধিরা সর্বসম্মতভাবে সমর্থন জানান।
কমিশনের প্রস্তাবে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন, যিনি আইন অনুযায়ী আইনসভার উভয় কক্ষের (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) সদস্যদের গোপন ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণরূপে সংসদীয় ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল হবে।
এর পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন আনা হচ্ছে। বিদ্যমান সংবিধানের ৪৮(৪) অনুচ্ছেদে বর্ণিত যোগ্যতাগুলো আগের মতোই প্রযোজ্য থাকবে। তবে এর সাথে একটি নতুন উপ-অনুচ্ছেদ, ৪৮(৪)(ঘ), যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই নতুন অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়ার সময় কোনও ব্যক্তি কোনও রাষ্ট্রীয়, সরকারি বা রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। এই বিধানটি রাষ্ট্রপতি পদকে সব ধরনের দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখার একটি প্রয়াস হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা পদটির নিরপেক্ষতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঐক্যমত্য দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় একটি ইতিবাচক সংযোজন এবং এটি ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থার রূপরেখা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ডিবিসি/এএমটি