ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) তাদের জনবল ধরে রাখতে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বড় সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। রবিবার প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সেনাবাহিনীতে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী সেনাসদস্যের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে, যা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
টাইমস অফ ইসরায়েলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইডিএফ-এ বর্তমানে লেফটেন্যান্ট এবং ক্যাপ্টেন পদে প্রায় ১,৩০০ জন এবং মেজর পদে ৩০০ জন কর্মকর্তার ঘাটতি রয়েছে। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে মাত্র ৬৩ শতাংশ কর্মকর্তা সেনাবাহিনীতে তাদের চাকরি চালিয়ে যেতে আগ্রহী, যা ২০১৮ সালে ছিল ৮৩ শতাংশ। নন-কমিশন্ড অফিসারদের ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি আরও নাজুক; বর্তমানে মাত্র ৩৭ শতাংশ থাকতে আগ্রহী, যেখানে ২০১৮ সালে এই হার ছিল ৫৮ শতাংশ।
দীর্ঘদিন ধরেই বেসামরিক চাকরির লাভজনক সুযোগ-সুবিধার কারণে সেনাবাহিনীতে ক্যারিয়ার সেনাসদস্যদের ধরে রাখা কঠিন ছিল। তবে সাম্প্রতিক যুদ্ধের ক্লান্তি, সেবার মান নিয়ে অসন্তোষ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নেতৃত্বের নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের কারণে এই সংকট এখন চরম আকার ধারণ করেছে।
পার্সোনেল ডিরেক্টরেটের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৬০০ জন ক্যারিয়ার সেনাসদস্য মেয়াদের আগেই অবসরে যাওয়ার আবেদন করেছেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কম অভিজ্ঞ তরুণ কর্মকর্তাদের দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আইডিএফ এর পার্সোনেল ডিরেক্টরেটের চিফ অব স্টাফ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির ভাদমানি সতর্ক করে বলেছেন, ২০২৮ সালের মধ্যে ৫০০ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে ৪০০ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিয়োগের প্রয়োজন হবে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে পূরণ করা কঠিন।
অন্যদিকে, যুদ্ধের তীব্রতা কমে আসায় ২০২৬ সালে রিজার্ভিস্টদের বা সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালনের সময়সীমা কমানোর পরিকল্পনা করেছে আইডিএফ। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৬ সালে রিজার্ভিস্টদের বছরে সর্বোচ্চ ৬০ দিন দায়িত্ব পালন করতে হবে, যার মধ্যে প্রায় ছয় সপ্তাহ থাকবে অপারেশনাল কাজ।
যুদ্ধের প্রথম বছরে কমব্যাট সৈন্যরা গড়ে ১৩৬ দিন এবং কমান্ডাররা ১৬৮ দিন রিজার্ভ ডিউটি পালন করেছিলেন। আগামীতে রিজার্ভিস্টদের ওপর চাপ কমিয়ে প্রশিক্ষণের ওপর বেশি জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাহিনীটি।
ডিবিসি/এনএসএফ