প্রত্যেকেই চান তাকে লোকজন সম্মান করুক। তাকে সম্ভ্রম দিয়ে কথা বলুক। এখন কথা হলো, সম্মান পাওয়া কি এতই সহজ? আপনার এমন কী গুণ আছে, যে জন্য লোকে আপনাকে সম্মান করবে? সমাজে সম্মানিত হতে হলে অবশ্যই কিছু বিষয়-আশয় মাথায় রাখতে হবে।
সমাজে নীতি-নৈতিকতার অবক্ষয় চলছে অনেক আগে থেকেই। একে অপরকে অসম্মান করা তারই সাক্ষ্য দেয়। মানুষ যাকে সম্মান করে, তার আচরণগুলোও ইতিবাচকভাবে দেখে। কিছু বৈশিষ্ট্য অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণামূলকও হতে পারে। যা আদর্শ হিসেবেও ধরে নেওয়া যায়।
সম্মানিত ব্যক্তিরা সহানুভূতিশীল, ধৈর্যশীল এবং শান্ত স্বভাবের হন। তারা অন্যকে দ্রুত বিচার করেন না। বরং যেকোনো বিষয়ে মতামত দেওয়ার আগে সময় নেন এবং এমন একটি সিদ্ধান্তে আসেন, যা সবার জন্য ভালো। এ ধরনের মানুষের কণ্ঠস্বরেই যেন জাদু থাকে, তারা কেবল কয়েকটি কথা বলেই হলভর্তি মানুষকে মুগ্ধ করতে পারেন।
আরও কিছু বৈশিষ্ট নিয়ে কথা বলা যাক-
অপরকে সম্মান দিয়ে কথা বলা
সম্মানিত ব্যক্তিরা সর্বদা অন্যকে সম্মান দিয়ে কথা বলেন। তারা নিরহংকারী হন। এমনকি কখনও কারও কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেও কঠোর ভাষা ব্যবহার করেন না। তারা অন্যের মনে কষ্ট না দিয়ে কথা বলেন। তারা খুব বিশ্লেষণাত্মক পদ্ধতিতে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।
মনোযোগী শ্রোতা
বেশিরভাগ মানুষ নিজে শুধু বলতে চান। অন্যের কথা মন দিয়ে শুনেন না। কিন্তু সম্মানিত ব্যক্তিরা মনোযোগ দিয়ে অন্যদের কথা শোনেন। বিপরীতের মানুষটি কী বলছেন, তার দিকে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন। তারা অন্যের কথা বলার মধ্যে প্রশ্ন করে বিরক্ত করেন না। মন দিয়ে পুরোটা শুনে এরপর কোনো প্রশ্ন থাকলে, সেটি জানতে চান।
সহমর্মিতা
এ ধরনের মানুষ অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। তারা অন্যের কষ্ট এবং ব্যথা অনুভব করার চেষ্টা করেন, লাঘব করারও চেষ্টা করেন। তারা সহজেই কাউকে বিচার করতে যান না এবং মানুষের পরিস্থিতি বিবেচনা করেন। মানুষকে বুঝতে চেষ্টা করেন।
বিনয়ী
সম্মানিত ব্যক্তিরা খুব বিনয়ী হন। তাদের একটি আদর্শ ব্যক্তিত্ব থাকে। তারা মনে করেন না যে, তারা অন্য কারও চেয়ে ভালো এবং সর্বদা অন্যদের কাছ থেকে শেখার জন্য উৎসাহী থাকেন। তারা তাদের নিজস্ব সীমাবদ্ধতা স্বীকার করেন এবং কোনোকিছু সম্পর্কে জানা না থাকলে খুব সহজেই অন্যদের কাছে সাহায্য চান। তাদের মনে কখনও ছোট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না।
আন্তরিকতা
যে কারও যে কোনো বিষয়ে তারা আন্তরিক হন। কাউকে এড়িয়ে যান না। কারও সমস্যা সমাধান না করতে পারলেও বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেন।
নির্ভরযোগ্যতা
মানুষেরা এ ধরনের ব্যক্তির ওপর নির্দ্বিধায় আস্থা রাখতে পারেন। কারণ তারা খুবই নির্ভরযোগ্য হয়ে থাকেন। তারা কথা দিয়ে কথা রাখেন। তাই তারা কোনোকিছু নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিলে মানুষেরা সহজেই বিশ্বাস করেন। কারণ, এ ধরনের ব্যক্তি সব সময় অন্যকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকেন।
বিদ্ধান
সম্মানিত ব্যক্তি সাধারণত বিদ্ধান হন। যে কোনো বিষয়ে বিস্তর জ্ঞান রাখেন। ধীরেসুস্থে যে কোনো পরিস্থিতি সামলান।
মিশুক
এ ধরনের মানুষ মিশুক স্বভাবের হন। নিজের মধ্যে কোনো দাম্ভিকতা রাখেন না, ধনী-গরিব ব্যবধান করেন না।
হাসি-খুশি
সর্বাবস্থায়ই তারা হাসিখুশি থাকেন। তাদের আচরণে মনেই হয় না তারা কখনও কষ্টে থাকেন।
সময়নিষ্ঠ
সম্মানিত ব্যক্তি সময়নিষ্ঠ হন। শত ঝামেলায়ও যে কোনো কাজ সময়মতো করে থাকেন।
ডিবিসি/রূপক