সম্রাটের পৈতৃক বাড়িতে একটা দোতলা ঘর ছাড়া তেমন কোনো সম্পত্তি নেই বলে দাবি করেছে পরিবার।
ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্যাসিনো ও জুয়াবিরোধী অভিযানের পরপরই "ক্যাসিনো সম্রাট" হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের নাম উঠে আসে। আলোচিত এই যুবলীগ নেতা ক্যাসিনো ও মাদকের ব্যবসায় রাতারাতি কোটিপতি হলেও তার পৈতৃক বাড়িতে একটি দোতলা ঘর ছাড়া নেই কোন সম্পত্তি। রাজধানীতে সে প্রভাবশালী বা ক্যাডারভিত্তি রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিতি পেলেও নিজ এলাকায় তিনি একজন ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি।
ফেনীর পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নের সাহেব নগর চৌধুরী বাড়ীর মৃত ফয়েজ আহম্মদের মেজ ছেলে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। তার বাবা ছিলেন রাউজকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। সম্রাট থাকেন রাজধানীর মহাখালীর বাসায়। তার গ্রামের বাড়ি পরশুরামে হলেও সেখানে ছোট বোন ও মা ছাড়া কেউ থাকেন না। সম্প্রতি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর সম্রাটসহ তার অনুসারীরা গা ঢাকা দেয়। এরপর, রবিবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে তাকে আটক করে র্যাব।
নব্বইয়ের দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতি সক্রিয় ছিলেন সম্রাট। পরে, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সবশেষ কাউন্সিলে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নির্বাচিত হন। দক্ষিণ যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা মিল্কী হত্যাকাণ্ডের পর সম্রাটের আর পিছনে তাকাতে হয়নি। মতিঝিল, ফকিরাপুল, পল্টন, কাকরাইল, বাড্ডা এলাকায় অপরাধ জগতের একক আধিপত্য তৈরি করেন সম্রাট। তাই ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে রাজধানীর জুয়াড়িদের কাছে বেশ পরিচিত নাম ছিলো তার। রাজনীতির পাশাপাশি তার নেশা ও পেশা ছিলো জুয়া খেলা।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকার আন্ডারগ্রাউন্ডের বস হিসেবে খ্যাতি পেলেও নিজ এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা তৈরিসহ অসহায় মানুষের পাশে সবসময় দাঁড়াতেন সম্রাট। তাই গ্রেপ্তারের পরই তার মুক্তির দাবিতে নিজ এলাকায় মিছিলসহ বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
এদিকে, সম্রাটের পরিবারের সদস্যদের দাবী, তার বাড়িতে পৈতৃক একটি দোতলা বাড়ি ছাড়া নেই কোনো কিছু। আর খারাপ কোনো কাজে তিনি জড়াতে পারেন না। তাই তাকে অযথা হয়রানী না করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান তারা।
সম্রাটের ছোট বোন ফারহানা চৌধুরী বলেন, 'আমরা সাধারণভাবে ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। আমার মা অসুস্থ, তাঁকে দেখার কেউ নেই। আমার ভাই সম্রাট হার্টের রোগী। তাকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমার ভাই যদি অপরাধ করতেন, তাহলে আমাদের অনেক সম্পদ থাকতো। আমরা অনেক ওপরে উঠে যেতাম।'