সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সকল সদস্য এবং তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দিবসটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (২০শে নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায় তিনি এই শুভেচ্ছা জানান। একইসঙ্গে তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর আত্মদানকারী শহীদদের ও বীরশ্রেষ্ঠদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় তারেক রহমান বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্য ও তাদের পরিবারের আমি সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করি। এই বিশেষ দিনে আমি সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক সাফল্য, উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করছি। পাশাপাশি স্বাধীনতা যুদ্ধে এই বাহিনীর যে অকুতোভয় বীর সদস্যরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী গঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের অগ্রযাত্রা ও চূড়ান্ত বিজয়ের স্মারক হিসেবে প্রতিবছর এই দিনটিকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তিনি এই বাহিনীকে নির্ভীক সাহসিকতা, শৌর্য এবং সংকল্পবদ্ধ শৃঙ্খলার প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেন। ৭১-এর রণাঙ্গনে সশস্ত্র বাহিনীর অসীম সাহসী ভূমিকা ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমাদের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে চলেছেন। শুধু দেশেই নয়, বিশ্বশান্তি রক্ষায় জাতিসংঘের মিশনেও বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী ও প্রশংসনীয় করেছে। আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও এই গৌরোজ্জ্বল ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া দেশের যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ক্রান্তিকালে সশস্ত্র বাহিনীর বলিষ্ঠ ভূমিকা তাদের জাতির আস্থার প্রতীকে পরিণত করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার বার্তায় সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক সেনাপ্রধান শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি প্রযুক্তিনির্ভর, গতিশীল ও দক্ষ বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছিলেন। তিনিই মূলত সশস্ত্র বাহিনীকে সুশিক্ষিত ও পেশাদার বাহিনীতে পরিণত করেছিলেন।
তিনি আরও যুক্ত করেন, শহীদ জিয়ার সময় থেকেই বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী সুশৃঙ্খল, ক্ষিপ্র ও সদা তৎপর এক আধুনিক বাহিনীতে পরিণত হয়, যা বিশ্বের যেকোনো আধুনিক রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সমকক্ষ। পরবর্তীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীনও সশস্ত্র বাহিনীকে আরও আধুনিক করার ধারা অব্যাহত রাখেন, যা বৈশ্বিক পরিসরে ব্যাপক অবদান রাখছে। ভবিষ্যতেও এই প্রয়াস অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বার্তার শেষাংশে মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী ৭ বীরশ্রেষ্ঠের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোস্তফা কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ ও বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফকে।
পরিশেষে তিনি সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করে 'আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে নিজের বক্তব্য শেষ করেন।
ডিবিসি/এএমটি