আন্তর্জাতিক, এশিয়া

সাড়ে চার বছর পর মিয়ানমারের জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ৩১শে জুলাই ২০২৫ ০২:৫৭:০১ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা বৃহস্পতিবার (৩১শে জুলাই) দেশটিতে জারি থাকা জরুরি অবস্থার অবসান ঘটিয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচন বর্জনের অঙ্গীকার করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী জরুরি অবস্থা জারি করেছিল, যা দেশটিকে এক রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয় এবং এতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই আদেশের মাধ্যমে জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং আইনসভা, নির্বাহী এবং বিচার বিভাগের উপর একচ্ছত্র ক্ষমতা লাভ করেছিলেন।

 

জান্তার মুখপাত্র জ মিন তুন সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক ভয়েস মেসেজে বলেন, 'দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আজ জরুরি অবস্থা বাতিল করা হলো।" তিনি আরও যোগ করেন, "আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।'

 

তবে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাসহ বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করার কথা জানিয়েছে। গত মাসে জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনকে সামরিক বাহিনীর শাসনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য একটি 'প্রতারণা' বলে আখ্যায়িত করেন।

 

মিন অং হ্লাইং স্বাক্ষরিত এক আদেশে জরুরি অবস্থার নিয়ম বাতিল করে ক্ষমতা রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মিন অং হ্লাইং নিজেই দেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে এই পদে বহাল আছেন। ফলে ক্ষমতা কার্যত তারই হাতে রয়ে গেল। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম অনুসারে, রাজধানী নেপিদোতে মিন অং হ্লাইং তার প্রশাসনের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে প্রথম অধ্যায় পার করেছি। এখন আমরা দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করছি।'

 

বিশ্লেষকদের ধারণা, নির্বাচনের পর তিনি রাষ্ট্রপতি বা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিজের ক্ষমতা আরও সুসংহত করবেন। এরই মধ্যে মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বে একটি নতুন 'ইউনিয়ন সরকার' এবং 'জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তি কমিশন' গঠন করা হয়েছে।

 

নির্বাচনের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন চলছে এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে। এদিকে, জান্তা সরকার বুধবার একটি নতুন আইন জারি করেছে, যেখানে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে বক্তৃতা বা বিক্ষোভের জন্য ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

 

নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে গত বছর পরিচালিত আদমশুমারিতে দেখা যায়, দেশের ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি, যার অন্যতম কারণ হিসেবে 'উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা সীমাবদ্ধতা'কে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে গৃহযুদ্ধের মধ্যে এই নির্বাচনের পরিধি কতটা সীমিত হতে পারে।

সূত্র- ফ্রান্স২৪


ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন