খেলাধুলা, জেলার সংবাদ, ফুটবল

সাফ নারী দলের ৬ ফুটবলারকে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সংবর্ধনা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ৪ঠা এপ্রিল ২০২৪ ১০:১২:৩৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

পঞ্চগড়ে সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ (অনুর্ধ্ব-১৬ ও অনুর্ধ্ব-১৯)’র ছয় কৃতি ফুটবল খেলোয়াড়কে সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সংবর্ধনা দেয়া হয়।

 

এ সময় সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ (অনুর্ধ্ব-১৯)’র কৃতি খেলোয়াড় ও নুসরাত জাহান মিতু ও তৃষ্ণা রানী এবং সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ (অনুর্ধ্ব-১৬)’র কৃতি খেলোয়াড় ইয়ারজান বেগম, শিউলী রাণী, বৃষ্টি রায় ও আলপি বেগমের হাতে ফুলের তোড়া, ক্রেস্ট ও ঈদ উপহার তুলে দেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা।

 

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু সাইদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সীমা শারমিন, টুকু ফুটবল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আবু তারেক ওরফে টুকু রেহমান, বোদা ফুটবল একাডেমীর পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন বিপুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সায়খুল ইসলাম, জেলা ক্রিয়া কর্মকর্তা গৌতম রায় সহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

এসময় সাফ অনুর্ধ্ব ১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম তার উঠে আসার গল্পে বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার বাবা-মা ও টুকু ফুটবল একাডেমীর কোচ টুকু রেহমানকে। আমি খুব কষ্ট করে পঞ্চগড়ে ফুটবল প্রাকটিস করতে আসতাম। ভাড়ার টাকা ছিলনা। বাবা মা ও কোচের সহযোগীতায় অনেক কষ্টে অনুশীলন করে জাতীয় দলের হয়ে খেলে দেশকে সাফ অনুর্ধ্ব ১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন করতে পেরে নিজেকে ভাল লাগছে। অনেকে আমার বাবাকে বলতে এটা কি তোমার ছেলে নাকি মেয়ে? আমার বাবা বলতো সে আমার ছেলে ও মেয়ে দুটোই। এভাবেই নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে দেশের হয়ে খেলেছি। আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন দেশকে আরো শিরোপা এনে দিতে পারি।’

 

সাফ অনুর্ধ্ব ১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের খেলোয়ার শিউলী রাণী তার উঠে আসার গল্পে বলেন, ‘আমরা যখন বোদা ফুটবল একাডেমীতে প্র্যাকটিস করতে আসতাম তখন অনেকে টিটকারী করে বলতে এরা ছোট ছোট পোশাক পড়ে, পুরুষের মত চুল কাটে। এদের কাজ তো বিয়ে করবে, সংসার করবে, রান্না-বান্না করবে। তখন আমার মন খুব খারাপ হতো। তবে মা আমাকে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। আমরা পারিবারিকভাবে খুবই অসচ্ছল। কষ্ট করে প্রশিক্ষণ নিয়ে আজ জাতীয় দলে খেলছি। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন দেশের জন্য কাপ নিয়ে এসে বাবা মাসহ সকলের মুখ উজ্জল করতে পারি।’

 

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জেলার ৬ কৃতি সন্তান ও অনুর্ধ্ব-১৬ এর ৪ জন এবং অনুর্ধ্ব-১৯ এর ২ জন মোট ৬ জন নারী চ্যাম্পিয়নশীপের খেলোয়াড়কে সংবর্ধনা দিতে পেরে আনন্দিত। ইতিমধ্যে আমরা ও অনুর্ধ্ব-১৬ এর গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগমের পারিবারিক কথা চিন্তা করে একটি সেমি পাকা বাড়ি করে দিচ্ছি। এছাড়া বাকী কৃতি খেলোয়াড়দের মধ্যে কারো পারিবারিক সমস্যা থাকলে সে বিষয়েও আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।’

 

এর আগে এই ৬ কৃতি খেলোয়াড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে পৌছালে তাদের ফুল ছিটিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।

 

চলতি বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি মাসের দেশের মাটিতে ১-১ (পেনাল্টি শ্যুাট আউটে ১১-১১) গোলে ভারতের সাথে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ এবং চলতি বছরের ১০ই মার্চ নেপালের মাটিতে ভারতকে ১-১ (৩-২) গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।

 

উল্লেখ্য, সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ (অনুর্ধ্ব-১৯)’র নুসরাত জাহান মিতু ও তৃষ্ণা রানী এবং সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ (অনুর্ধ্ব-১৬)’র শিউলী রাণী, বৃষ্টি রায় ও আলপি বেগমের বাড়ি জেলার বোদা উপজেলায়। এই ৫ কৃতি খেলোয়াড় বোদা ফুটবল একাডেমীতে অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পায়। এছাড়া সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ (অনুর্ধ্ব-১৬)’র কৃতি খেলোয়াড় ইয়ারজান বেগমের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে। সে টুকু ফুটবল একাডেমীতে অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পায়।

 

ডিবিসি/ এসএইচ

আরও পড়ুন