অপরাধ

সামাজিক মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদ: 'ডার্ক সাইটে' কিশোরীদের নগ্ন ছবি

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ২০শে অক্টোবর ২০২০ ০১:৩০:০৮ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক আইডিতে পরিচয়। সময় গড়ালে দেয়া-নেয়া শুরু কিশোরীদের নগ্ন ও স্পর্শকাতর ভিডিও। এরপরই শুরু ব্ল্যাকমেইল। তারপর ঘটনা গড়ায় পর্নোসাইটে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার।

এমন অনেক অভিযোগ পেয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীকে। এসময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু সেক্স টয় ও প্রচুর পরিমাণে ভিডিও উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থীরা বলছেন, ভার্চুয়াল সম্পর্কের এক পর্যায়ে তারা ব্যক্তিগত গোপনীয় ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে থাকে। পরে ভুক্তোভোগী কিশোরীর পরিবারের কাছে তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকাও দাবি করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত একজন বলেন, 'ফেইক আইডি ওপেন করি। তারপর দেশ-বিদেশি নানা মেয়ের সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়। তাপরপর ন্যুড কন্টেন্ট শেয়ার করি।

গ্রেপ্তারকৃত আরো একজন বলেন, 'একটা মেয়ের সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। তখন আমি তার কিছু ছবি তার পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করি।'

তৃতীয় জন বলেন, 'আমি একটা মেয়ের সঙ্গে যুক্ত হই। তার তার সঙ্গে পর্ন সংক্রান্ত কথাবার্তা বলি। তাকে বেশকিছু ছবি প্রেরণ করি।'

এই তিন সাইবার অপরাধীকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের ডিজিটাল ফরেনসিক টিম বলছে, এই চক্রের টার্গেট ৯ থেকে ১৮ বছরের কিশোরী। তারা শিশু পর্নোগ্রাফির সঙ্গে জড়িত। সম্পর্কের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে তাদের দিয়ে অশালীন ভিডিও তৈরি করে তা আদান প্রদান চলে। এরপর তা চলে যায় সাইবার জগতে।

ডিএমপি'র ডিজিটাল ফরেনসিক ইউনিটের সহকারী পুলিশ কমিশনার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, 'ফেইক নাম দিয়ে বা কখনো সমকামী সেজে বিভিন্ন ভিডিও তারা কালেক্ট করে নিতো। এই কন্টেন্টগুলো পার্টিকুলার কিছু ফেইক ইন্স্টাগ্রাম গ্রুপ আছে সেখানে তারা শেয়ার করে। এই গ্রুপগুলো চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ। শেয়ার কেন্দ্রিক বাদানুবাদের পর এই ভিকটিমগুলো তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।'

গ্রেপ্তার তিন শিক্ষার্থীর অসংখ্য বিদেশি সব পর্নোসাইটে রেজিস্ট্রেশন করা। পুলিশ বলছে, এমন চক্রের ফাঁদে যেন আর কেউ না পড়ে এজন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। ইশতিয়াক আহমেদ আরো বলেন, 'সাইবার প্যারেন্টিং এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আপনার সন্তান সাইবার ওয়ার্ল্ডে সারফেস ওয়েবে আছে নাকি ডার্ক ওয়েবে বিচরণ করছে এটি নিয়ে আপনার সন্তানকে যদি যথেষ্ট পরিমাণ সচেতন না করতে পারেন তাহলে দু-একটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স করে আমরা পুুলিশ এটা কমাতে পারবো না।'

গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। সেই সঙ্গে এই চক্রের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তার তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুন