সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশির সঙ্গে পরিচয়। এরপর আলাপচারিতায় বন্ধুত্ব। পরে দামি গিফট পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা প্রতারণা। অভিনব এমন চক্রের শিকার হচ্ছেন অনেক নারী। এই চক্রে নাইজেরিয়ার নাগরিক ছাড়াও আছে বাংলাদেশিরাও।
বছর খানেক আগের ঘটনা- কথিত ব্রিটিশ নাগরিকের সাথে ফেসবুকে পরিচয়- বাংলাদেশী নারীর। শুরু হয় যোগাযোগ- পরে বন্ধুত্ব। এক সময় কথিত বন্ধু স্বর্ণালংকার- দামি মোবাইল ফোন ও কসমেটিকসসহ নানা গিফট পাঠিয়ে তা সংগ্রহ করার কথা জানান।
ওই নারীকে গিফট আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন। জানানো হয়, শুল্ক পরিশোধ করলে তা পৌঁছে যাবে তার বাড়িতে।
পার্সেলে বিপুল বিদেশি মুদ্রাসহ দামি গিফট সামগ্রী রয়েছে জানিয়ে দাবি করা হয় কয়েক লাখ টাকা। দেয়া হয় ব্যাংক একাউন্ট নম্বর। বিদেশি মুদ্রা থাকায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলার ঝামেলার কথাও জানানো হয়। ঝামেলা এড়াতে তাৎক্ষণিক পাঠান টাকা ওই নারী। তবে উপহার আর পৌঁছায় না।
হতাশ নারী যান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে- জানান আমর্ড পুলিশকে। ভুক্তভোগীর ওই নারী জানান, 'দুই দফায় এক লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিয়েছি।' অপর ভুক্তভোগী নারী বলেন, 'আমাকে মোবাইল ফোন, সোনার গহনা দেবে জানিয়ে ৬০০ ডলার আমাকে দিতে বলে। আমি জানাই চার লাখ ২০ হাজার টাকা দিব। তুমি আমার সাথে দেখা করো, টাকা আমি তোমার হাতে হাতে দিব।'
অভিযানে নামে পুলিশ। ওই নারীর সহায়তায় আটক হয় নাইজেরিয়ান জশুয়া চুকউজিয়োক ডেভিডকে। এপিবিএন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, 'যে অ্যাকাউন্টটি থাকে সেটার অবস্থান দেখায় দেশের বাইরের। বিদেশে থাকা বন্ধু গিফ্ট পাঠাবে, সেটা খুব দামি জিনিস হবার কথা। সব মিলিয়ে লোভে পড়ে যায়।'
পুলিশ বলছে, ব্রিটিশ বন্ধু, কাস্টমস কর্মকর্তা সবই ভূয়া। এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকেই। চক্রটিতে রয়েছে আরো বেশকজন । তাদের ধরতে চলছে অভিযান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন আরও বলেন, 'প্রতিষ্ঠিত নারীদেরকে টার্গেট করে। ডেভিড অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশে আছে।'
যাচাই বাছাই না করে বিদেশির সাথে বন্ধুত্ব এবং দামি উপহারের লোভ সংবরণের পরামর্শ পুলিশের।