প্রতিবছর বাজেটে বেশি দামের সিগারেটের মূল্য বাড়ানো হলেও খুব কমই বাড়ে কম দামি সিগারেটের মূল্য। ফলে, তামাক ব্যবহারকারীরা সহজেই দামি সিগারেট ছেড়ে কমদামি সিগারেটে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করারোপ করার ক্ষেত্রে সিগারেটের মূল্যস্তর তুলে দিয়ে অভিন্ন করারোপ করতে হবে। তবেই বাড়বে রাজস্ব, বাঁচবে জনজীবন।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটে প্রতি শলাকার দাম বেড়েছে মাত্র ১০ পয়সা, যা ধুমপান ছেড়ে দেয়ার বদলে ভোক্তাদের তুলনামূলক কম দামি সিগারেট বেছে নিতে উৎসাহিত করছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে করহার অপরিবর্তিত রেখে সর্বস্তরের সিগারেটেই দাম বাড়ানো হয়েছে। প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৪২ টাকা করা হয়েছে। উচ্চস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৯ টাকা বাড়িয়ে ১১১ টাকা করা হয়েছে। মধ্যম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ২ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ টাকা করা হয়েছে। নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ১ টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে যা শলাকা প্রতি বেড়েছে ১০ পয়সা।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘মূল্য বৃদ্ধি তাদের কাছে কিছুই না। যারা মোটমুটি দিন পাড় করে দিত তাদের আয় তো কিছুটা বেড়েছে। যারা সিগারেট খেতে যায় তাদের জন্য এটা কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না।’
সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করে তামাক পণ্যের দাম বাড়ানো এবং তামাকজাত দ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানি শুল্ক আরোপের ওপর জোর দিচ্ছেন তামাক বিরোধী আন্দোলেনর কর্মীরা।
মানস প্রতিষ্ঠাতা ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ‘এই যে বাড়তি ট্যাক্সটা সরকারের কোষাগারে জমা হয়, সেটা দিয়ে কিন্তু এই বার লক্ষ লোক অসুস্থ হয়, চার লক্ষ লোক পঙ্গু হয়, এক লক্ষ ৬২ হাজার লোকের মৃত্যু হয়, তাদেরকে বাচানো যায়, আর্থিক সহায়তা করা যায়।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. খলিকুজ্জমান বলেন, ‘তামাক জাত দ্রব্য বিদেশে রপ্তানি করার উপরে একটা রপ্তানিশুল্ক ছিল ২৫ শতাংশ তিন বছর আগেও। সেটাকে উঠে দেয়া হয়েছে। এর মানে হচ্ছে দেশে এটার আরও উৎপাদন বাড়ানোকে উৎসাহ করা হচ্ছে।’
তাদের মতে, তামাকখাত থেকে রাজস্ব আহরণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় সরকার যেমন বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি জনস্বাস্থ্য হুমকিতে পড়ছে।