ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম না থাকায় সেবা দিতে অনীহা প্রকাশ চিকিৎসকদের। সেবা না পেয়ে সঙ্কটে রোগীরা।
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই না থাকায় বরিশালে চিকিৎসা দিচ্ছেন না অনেক চিকিৎসক। এতে, সঙ্কটে পড়েছেন রোগীরা। কয়েকদিনের মধ্যেই চিকিৎসকদের হাতে সুরক্ষা সরঞ্জাম পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তারপরও কেউ চিকিৎসা না দিলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সদর উপজেলার পঞ্চাশোর্ধ হুমায়ুন কবির। কাশি, বুকে ব্যথা নিয়ে এসেছেন বরিশাল মেডিক্যালে। বহির্বিভাগে মেডিসিনের ডাক্তার দেখাতে চাইলেও কক্ষেই ঢুকতে দেয়া হয়নি। মোবাইল ফোনে চিকিৎসা নেবার পরামর্শ দিয়ে চিকিৎসকের সহকারীরা রোগীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি এই রোগীর। একই দাবি শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদেরও।
অনেকে প্রাইভেট চিকিৎসাও বন্ধ করেছেন। দাবি, চিকিৎসা সেবা দিতে তাদের নিজেদেরই কোনও সুরক্ষা নেই।
মেডিক্যালের চিকিৎসকরা জানান, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার করার পরও চীনে ৫০ শতাংশ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে আমাদের ন্যূনতম কোনও নিরাপত্তা সামগ্রী নেই। এমনকি কোনও নিরাপত্তা সামগ্রী দেয়াও হচ্ছে না।' পিপিই না থাকার পরও জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ঝুঁকির মধ্যেও অল্প পরিসরে সেবা দেয়া হচ্ছে বলে জানান আরেক চিকিৎসক। আর হাসপাতালের সিনিয়র এক নার্স জানান আমরা যদি ঝুঁকিতে থাকি তাহলে সেবা দেয়া কষ্টকর।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আপাতত করোনা ওয়ার্ডে কিছু ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য ওয়ার্ডেও দেয়া হবে।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'পিপিই যদি পর্যাপ্ত আসে তাহলে তাহলে সবার জন্য সরবরাহ করা হবে। আর এখন যেহেতু আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে তাই সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য পিপিই সরবরাহ করা হচ্ছে।'
দেশের সঙ্কটময় মুহূর্তে মানুষের পাশে থাকতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। একইসাথে শুনিয়েছেন কঠোর হুঁশিয়ারি বার্তাও। এই ক্রান্তিলগ্নে হঠাৎ করে চিকিৎসা সেবা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া চিকিৎসকদের বিরত থাকার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, কোনও চিকিৎসক যদি এমন সিদ্ধান্ত নেন তাহলে আইনগত দিক ভাবতে বাধ্য হব বলেও উল্লেখ করে ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল।
বিকল্প পথ অবলম্বন করে হলেও সাধারণ মানুষ যাতে চিকিৎসা পায় সেদিকে প্রশাসনের নজর দেয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের।