শুধু যৌন হয়রানি নয়, সৌদি আরবে কাজ করতে গিয়ে অনেক নারী ফিরছেন সন্তান নিয়েও। আবার অনেকেই দেশে আসছেন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে।
গত অর্থবছরে সৌদি আরবে থেকে কারামুক্ত হয়ে ফিরেছেন প্রায় ৫ হাজার নারী গৃহকর্মী।
সরকারি হিসাব প্রকাশ করা না হলেও, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের হিসাবে গত তিন বছরে সন্তান নিয়ে দেশে ফিরেছেন ১২ জন। আর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফিরেছেন ৬৫ জন নারী। সরকারি হিসাবে গেলো তিনমাসে আইনি সহায়তায় দেশে ফেরত এসেছেন ৬৭ জন।
মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ২ মাস সৌদি আরবে জেলখেটে দেশে ফিরেন এক নারী। গৃহকর্মী হিসেবে ২০১৮ সালের নভেম্বরে সৌদি আরবে গিয়ে নির্যাতিত হয়ে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারান। দেশে ফেরেন চলতি বছর ৮ জানুয়ারি।
সরকারি হিসেবে সৌদি আরবের একটি সেইফহোমে ২০১৯-২০ সালে নারী গৃহকর্মীর সংখ্যা ছিলো ৫৩০ জন। তাদের সবাইকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। ২০২০-২১ বছরে নিরাপদ হেফাজতে ছিলেন ১৭৬ জন, তাদের ১৫৮ জনকে ফেরৎ পাঠানো হয়। ২০১৯-২০ সালে সৌদি পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছিল ২৭ হাজার ৭১৪ জনকে। আর ২০২০-২১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৮৯ জনে। তাদের একটি অংশ নারী। তাদের প্রায় সবাইকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর জানান, নারী গৃহকর্মীরা যে বাড়িতে কাজ করবেন রাতে সেখানে অবস্থান করতে হবে না দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং রিক্রুটিং এজেন্সির সহায়তায় যদি এমন ব্যবস্থা করা যায় তাহলে নির্যাতন কমে আসতো।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ হাসান ঈমাম বলেন, এতো কেন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে সে বিষয়ে নজর দেয়ার সময় এসেছে।
গেল ২২ অক্টোবর রাতেও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দেশে ফেরেন এক বাংলাদেশি নারী কর্মী। মানসিক বিপর্যস্ত অবস্থায় ৪ দিন বিমানবন্দরে থেকে ২৬ অক্টোবর তাকে উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন জানান তিনি এ তথ্যের সঙ্গে একমত নন, তবে নির্যাতনের ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দেন। বলেন, এতো কিছুর পরও নারী গৃহকর্মীদের বাইরে যাওয়ার আগ্রহ অনেক বেশি।
সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও অন্য খাতগুলোকে বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।