রাজনীতি

স্বৈরাচার পতন দিবস: ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতির কারণেই এরশাদের পুনর্বাসন

এ. এস. এম রেজওয়ানুছ সাদাত

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ৬ই ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:৪৫:৪৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর যে উদ্দেশ্যে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছিল তার কতটুকু পূরণ হয়েছে?

পতনের পরও এরশাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে থাকা দলগুলোর প্রতিহিংসার রাজনীতির ফসল। ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতির কারণেই এরশাদকে সুযোগ দিয়েছে দুই বড় দলই। একারণেই এখন আর তেমন পালিত হয় না স্বৈরাচার পতন দিবস। এসব মন্তব্য স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে থাকা দুই ছাত্রনেতার।  তবে, এসব মন্তব্যে ভিন্নমত তৎকালীন ছাত্রনেতা অসীম কুমার উকিলের। যে উদ্দেশ্যে স্বৈরাচার পতন করা হয়েছিল, তার বেশিরভাগই পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

১৯৮২ সালের ২৪শে  মার্চ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন সামরিক বাহিনীর প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গণ আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন এই স্বৈরাচার।

এরশাদ পতনের ২৯ বছর পরে কতটুকু সুসংহত হয়েছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র? যে ১০ দফা দিয়েছিল সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য তার কতটুকুই বা পূরণ হয়েছে? তৎকালীন ছাত্রনেতাদের কাছে ছিল এ প্রশ্ন?

এ বিষয়ে ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, 'ক্ষমতায় টিকে থাকার এবং সংসদীয় রাজনীতি থেকে যেভাবে এরশাদের বিদায় চেয়েছিলাম তার পতনের পর সেটা করা সম্ভব হয়নি।'

ডাকসুর সাবেক আরেক জিএস খায়রুল কবীর খোকন বলেন, 'আমাদের যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছিল তা থেকে বেরিয়ে এসে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আমরা তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছি। ক্ষমতায় যাওয়ার এবং থাকার যে মানসিকতা আমাদের সেখান থেকে আমরা এখনও বেরিয়ে আসতে পারিনি।'

তবে, ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার উকিল মনে করেন, যে উদ্দেশ্যে স্বৈরাচার পতন করা হয়েছিল, তার বেশিরভাগই পূরণ হয়েছে।

তিনি বলেন, 'সংসদ যে সকল সমস্যা সমাধানের কেন্দ্রবিন্দু হবে তা আজকের দিনে প্রতিফলিত হয়েছে। এছাড়া, বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ পৃথকীকরণ আমাদের অন্যতম একটা দাবি ছিল তা আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। সে সময়, স্বতন্ত্র নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবি ছিল, সেখানে আজ শক্তিশালী স্বতন্ত্র নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে।'

দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া এরশাদের পতন দিবস একসময় নানা আয়োজনে পালন করা হলেও এখন আর সেভাবে পালন করা হয়না কেন? এ নিয়েও ভিন্নমত তৎকালীন  এই ছাত্রনেতাদের। 

ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, 'এরশাদ বা এরশাদের দল বিব্রত হোক এমন কাজ করা থেকে সব সময়ই ছাত্র সংগঠনগুলোকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।'

কিন্তু ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ  সম্পাদক অসীম কুমার উকিল জানান, দিবস পালন করার মাধ্যমেই কেবল তাৎপর্য নিহিত নয়। আমরা যে লক্ষ্যকে সামনে রেখে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছিলাম সে লক্ষ্য কতটুকু হয়েছে সেটাই মূল আলোচনার বিষয়।

আরও পড়ুন