বিবিধ

স্মৃতিচারণ ও গান-আবৃত্তিতে খামখেয়ালী সভা’র সনজীদা খাতুনের প্রতি স্মরণাঞ্জলি

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ৩রা জুন ২০২৫ ০২:১১:২৯ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কেন্দ্র করে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মননধর্মী সংগঠন খামখেয়ালী সভা ‘সনজীদা খাতুন স্মরণাঞ্জলি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক পুরোধা ব্যক্তিত্ব সনজীদা খাতুনকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

সোমবার (২রা জুন) সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর বাংলা মোটরে অবস্থিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এই স্মরণাঞ্জলি অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে স্মৃতিচারণ করেন এবং সনজীদা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গান পরিবেশন ও কবিতা আবৃত্তি করেন শিল্পী বুলবুল ইসলাম ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। সংগীতগুরু এবং সংগীতজ্ঞ হিসেবে তার অবদান তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অসীম দত্ত। অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন খামখেয়ালী সভা ট্রাস্টের সভাপতি মাহমুদ হাশিম ও অন্যতম সদস্য, চিত্রশিল্পী আব্দুল মান্নান। অনুষ্ঠানের শুরুতে সনজীদা খাতুন স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

 

অনুষ্ঠানের সূচনায় প্রাকবক্তব্য দেন খামখেয়ালী সভা ট্রাস্টের সভাপতি মাহমুদ হাশিম। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, সনজীদা খাতুন সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নৈতিকতার একটি মানদণ্ড স্থাপন করে গেছেন। তার নির্দেশিত পথই হতে পারে আমাদের মুক্তির উপায়।

 

রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী বুলবুল ইসলাম সংগঠক সনজীদা খাতুনের অবদান তুলে ধরে বলেন, সনজীদা খাতুন ও ওয়াহিদুল হক বাঙালি সংস্কৃতিকে শক্ত ভিত দিয়েছিলেন। তিনি ‘তোমায় নতুন করে পাব বলে’ এবং ‘ওগো, পথের সাথি, নমি বারম্বার’ গান দুটি পরিবেশন করেন। 

 

ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় সনজীদা খাতুনের বহুমুখী প্রতিভার কথা স্মরণ করে বলেন, তাঁর বিচরণ বহুমুখী ও বহুর্বণী। বাংলা ভাষার জন্য তাঁর অন্যতম অবদান হলো তাঁর ‘ধ্বনির কথা, আবৃত্তির কথা’ বইটি। আমার আবৃত্তি ও শিল্পচর্চার পথের অন্যতম অনুসরণীয় হলেন সনজীদা খাতুন। তিনি ‘ঝড়ের খেয়া’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন।

 

সনজীদা খাতুনকে বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক অসীম দত্ত বলেন, তিনি শুধু গান শেখাতেন না, গানের অর্থ, প্রেক্ষাপট ও আনুষঙ্গিক ঘটনাও বলতেন। কাব্যগত, ভাবগত, সুরগত অনুভব বুঝিয়ে দিতেন তিনি। সঙ্গীতে তাঁর অবদান মৌলিক ও অনন্য।

 

খামখেয়ালী সভা ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য, চিত্রশিল্পী আব্দুল মান্নান বলেন, সনজীদা খাতুন ও ওয়াহিদুল হক বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করে এমন প্রজন্ম তৈরি করে গেছেন। এই পরম্পরা ধরে রাখার দায়িত্ব তাদের যারা তাদের সাহর্চয লাভ করেছেন।

 

ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন সনজীদা খাতুন। ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গত শতকের ষাট দশকে জাতির জাগরণের উত্তাল সময়ে ছায়ানট হয়ে ওঠে বাঙালির সাংস্কৃতিক যাত্রার দিশারী সংগঠন। ১৯৭২ সাল থেকে ‘ছায়ানট সঙ্গীতবিদ্যায়তন’-এর অবৈতনিক অধ্যক্ষ, ২০০১ সাল থেকে ছায়ানট-এর সভাপতি, ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ’-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। প্রচলিত ধারার বাইরে ভিন্নধর্মী শিশুশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  নালন্দা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি। শান্তিনিকেতন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর তিনি ইডেন কলেজ, কারমাইকেল কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। উল্লেখ্য গত ২৫ মার্চ ২০২৫ তিনি অকাল প্রয়াত হন। তাঁর মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন হারায় তাদের অন্যতম অভিভাবককে।

 

ডিবিসি/কেএলডি

আরও পড়ুন