ঘণ্টার পর ঘণ্টার যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছেন ঈদে বাড়ি ফেরা উত্তরের হাজারো মানুষ। প্রতিবছরের মতো এবারেও ঈদের যাত্রায় যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে তাদের। সরকারের আগাম প্রস্তুতি আর প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ থাকলে এমন দুর্ভোগ পোহাতে হতো না বলে মনে করছেন এসব মানুষেরা।
যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ির দৌরাত্ম্য, চালকদের বেপরোয়া আচরণ, যেখানে সেখানে গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে এমন হচ্ছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত গাড়ির চাপ তো আছেই। যাত্রীরা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে যদি সঠিক পরিকল্পনা থাকতো তাহলে সড়কে শৃঙ্খলা থাকতো। সড়কে বিশৃঙ্খলা থাকার কারণেই তাদের এমন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে তীব্র যানজটের মধ্যে ঈদযাত্রায় আরেক ভোগান্তি হিসেবে দেখা দিয়েছে মুষলধারার বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার (৫ই জুন) বেলা ১২টা থেকে টাঙ্গাইল অংশে এ বৃষ্টি শুরু হয়। অবশ্য বৃষ্টি উপেক্ষা করেই খোলা ট্রাক, পিক আপ, পণ্যবাহী পরিবহন ও বাসের ছাদে চেপে পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে ঢাকা-টাঙ্গাইল পাড়ি দিচ্ছেন হাজারো মানুষ।
বৃহস্পতিবার (৫ই জুন) ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে এমন চিত্র দেখা যায়। বগুড়াগামী মাসুদ রানা নামে এক যাত্রী বলেন, ঈদে বাড়ি যেতে হবে। এমনিতেই মহাসড়কে তীব্র যানজটের মধ্যে মুষলধারায় বৃষ্টি চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। মামুন নামে আরেকজন বলেন, গণপরিবহন সংকটের মধ্যে কয়েকগুণ ভাড়া বেশি গুণতে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের খোলা পিকআপে নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছি।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আদিবুর রহমান বলেন, মহাসড়কে মাঝেমধ্যে গাড়ি বিকল ও দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় তা সরিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগছে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। যানচলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্মাণাধীন মহাসড়ক, দুই লেনের যুমুনা সেতু, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত গাড়ির চাপে সেতুতে যানজটে টোল আদায়ে ধীরগতি থাকার কারণেই মূলত এতো বড় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে প্রায় ২৩ কিলোমিটার এলাকায় থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
বেসরকারি এক পরিবহনের ঢাকা শাখার ব্যবস্থাপক মো. সোহেল রানা ডিবিসি নিউজকে বলেন, সড়কে যদি শৃঙ্খলা থাকে তাহলে কম যানজট হয়। বর্তমানে উত্তরের দিকে ঈদ উপলক্ষে দূরপাল্লার গাড়ির পাশাপাশি মিনিবাস, ফিটনেসবিহীন বাসসহ নানা ধরনের পরিবহন প্রবেশ করছে। অনেক চালক আছেন যারা ঠিকমতো রাস্তা চিনেন না। ফলে তারা এলোমেলোভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন। আবার দেখা যাচ্ছে মাঝরাস্তায় গাড়ি নষ্ট হচ্ছে। মূলত এসব কারণেই এতো বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। তবে যেখানে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের লোকজন আছেন সেখানে একটু শৃঙ্খলা রয়েছে। গাড়ির এতো বেশি শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে, যে আমরা সন্ধ্যা থেকে যেসব গাড়ি যাওয়ার কথা ছিল সেগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি।
ডিবিসি/কেএলডি