হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় মনতৈল অ্যাডভোকেট আবু জাহির মডেল কলেজের খেলার মাঠ ধান চাষের জন্য লিজ দেওয়ায় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ রফিক আলী গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই একক সিদ্ধান্তে ৪১ হাজার টাকায় মাঠটি লিজ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে মাঠটি হাল চাষ করে ধান চাষের উপযোগী করা হয়েছে, যার ফলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগ বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, লিজ থেকে প্রাপ্ত অর্থ কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ রফিক আলী দাবি করেছেন, গভর্নিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারেই মাঠ লিজ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, কলেজের তিন মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তার দাবি অনুযায়ী, বর্তমানে করাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস গভর্নিং বডির দায়িত্বে রয়েছেন। তবে মাঠটি কাকে লিজ দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দেননি।
অধ্যক্ষের এই দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত বক্তব্য দিয়েছেন করাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ ধরনের কোনো লিজের সিদ্ধান্তে তিনি জড়িত নন এবং টাকা-পয়সার লেনদেন বিষয়েও তিনি কিছুই জানেন না। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে পরবর্তীতে মন্তব্য করবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে, এই ঘটনায় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে, খেলাধুলার মাঠ কলেজের একটি অপরিহার্য অংশ। মাঠে ধান চাষ করা হলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পথ রুদ্ধ হবে এবং কলেজের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিষয়টি নিয়ে লাখাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী শারমিন নেওয়াজ বলেন, কলেজের জমি লিজ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপম দাস অনুপের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ডিবিসি/এমএআর