হবিগঞ্জে বিপন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণী একটি তক্ষক অবমুক্ত করা হয়েছে। তবে জেলার স্থানীয়রা এটিকে কক্কা নামে ডাকে। এটি ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস রোগের ওষুধের কাচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ভাদৈ বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পিছনে বনে এটি অবমুক্ত করা হয়।
জানা যায়, গত রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে শহরের পুরান বাজার বাশহাটা নামক স্থানে আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে বন বিভাগের লোকজন এটি উদ্ধার করে। ওই ব্যক্তি প্রাণীটি বিক্রির উদ্দেশ্যে ৩দিন যাবত লুকিয়ে রেখেছিল। অভিযানে নেতৃত্ব দেন রেঞ্জ কর্মকর্তার তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, জিয়াউল হক, অনুরঞ্জন অধিকারী।
তক্ষক (ইংরেজি নাম: Gecko, বৈজ্ঞানিক নাম: Gekko gecko) গেকোনিডি গোত্রের একটি গিরগিটি প্রজাতি। পিঠের দিক ধূসর, নীলচে-ধূসর বা নীলচে বেগুনি-ধূসর। সারা শরীরে থাকে লাল ও সাদাটে ধূসর ফোঁটা। মাথা অপেক্ষাকৃত বড়, নাকের ডগা চোখা ও ভোঁতা। চোখ বড় বড়, মণি ফালি গড়নের। লেজ সামান্য নোয়ানো। দৈর্ঘ্য নাকের ডগা থেকে পা পর্যন্ত ১৭ সেমি এবং লেজও প্রায় ততটা। তক্ষকের ডাক চড়া, স্পষ্ট ও অনেক দূর থেকে শোনা যায়, ডাকের জন্যই এই নাম। কক্কক্ আওয়াজ দিয়ে ডাক শুরু হয়, অতঃপর ‘তক্-ক্কা’ ডাকে কয়েক বার ও স্পষ্টস্বরে।
বাংলাদেশসহ মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস, কাম্পুচিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন ও ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৬০০ প্রজাতির তক্ষকের বসবাস। বাংলাদেশে প্রায় ২ প্রজাতির তক্ষক দেখা যায়। এশিয়ান প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ও আধুনিক চিকিৎসায় হাঁপানি, এইডস, ক্যান্সারের ওষুধ তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতার মোঃ জাহাঙ্গির আলম বলেন, তক্ষক ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তবে কিছু অসাধু ব্যক্তিরা এই তক্ষক চীন, থাইল্যান্ডে বিক্রি করে। এসব থেকে কোটি টাকা আয়ও করে। তবে এগুলো থেকে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস রোগের ওষুধের কাচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ডিবিসি/এনএম