স্বর্ণ আমদানিতে কর কমলেও উল্টো দাম বাড়ছে বাজারে
দেশে ১০ বছরে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৮২ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে স্বর্ণ আমদানিতে ২০ শতাংশ কর কমলেও উল্টো চড়া হারে দেশের বাজারে দাম বাড়ছে স্বর্ণের। আমদানি শুরু না হওয়ায় করছাড়ের কোনো প্রভাব বাজারমূল্যে নেই। উল্টো করোনাসহ বিশ্ব অস্থিরতায় সরবরাহ সংকট ও পাচার ঠেকাতে আন্তর্জাতিক বাজারে দর বাড়ার সাথে সমন্বয় রাখতেই দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।
গেল ২২শে জুন রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে মার্কেটে সীতাহার বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার টাকায়। যা এখন কিনতে হলে গুণতে হবে বাড়তি সাড়ে ১২ হাজার টাকা।
সীতাহার আগের দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৫০ টাকা। বর্তমান দাম ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯৪৩ টাকা। ভরিতে এক ধাক্কায় ৫ হাজার ৭১৫ টাকা বাড়ায় বিক্রি কমেছে বাজারে।
১০ বছরে দেশে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৩১ হাজার ৪৯২ টাকা। আর চলতি বছরেই স্বর্ণের দাম বেড়েছে চারবার। ব্যবসায়ীরা বলছেন- এজন্য দায়ী করোনাসহ বিশ্ব অস্থিরতা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, অনেক কিছুই দায়ী আছে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির জন্য। তার মধ্যে ৯০ শতাংশ দায়ী হচ্ছে তেল। যারা তেলের বাজারে বিনিয়োগ করতো, তারা বিনিয়োগ কর এ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াতে এখন স্বর্ণের বাজারকে নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে। এসব কারণেই বিশ্বের বাজারে স্বর্ণের দাম রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম (প্রতি ভরি) ২০১০ সালে ছিল ৩৮,৩৭৫ টাকা, আর ২০২০ সালে হয়েছে ৬৯,৮৬৭ টাকা। অর্থাৎ ১০ বছরে বেড়েছে ৮২%।
নতুন বাজেটে স্বর্ণ আমদানি শুল্ক কমেছে ১৫%। অগ্রিম কর কমেছে ৫%। বাজেটে স্বর্ণ আমদানিতে শুল্ক কমেছে ২০ শতাংশ। কিন্তু উল্টো বাজারে দাম বাড়ার জন্য চাহিদা বৃদ্ধিকেই কারণ বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, দুর্যোগের সময় যাদের হাতে পয়সা আছে তাদের অনেকেই স্বররণ বেশি কিনছেন। সেই চাহিদাই স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির বড় কারণ হতে পারে।
নীতিমালা থাকলেও স্বর্ণ আমদানি শুরু না হওয়ায় বাজেটে কর কমানোর কোনো প্রভাব পড়বে না বাজারে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে দর সমন্বয় না হলে বাড়বে পাচারের শঙ্কা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, পৃথিবীর কোন দেশেই বাজেট দিয়ে বাজারে কোন প্রভাব ফেলতে পারে না। আজ পর্যন্ত এক ভরি স্বররণ বৈধভাবে আমদানি হয়নি। আন্তর্জাতিক বাজার যদি আমরা অনুসরণ না করি তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এদেশ থেকে হাজার হাজার ভরি স্বর্ণ পাচাত করে নিয়ে যাবে।
২৪ ক্যারেটের খাঁটি স্বর্ণ প্রতি ভরি ব্যবসায়ীরা কিনছেন এখন ৬১ হাজার ৫০০ টাকায়।