বাংলাদেশ, অপরাধ, রাজধানী

১০ মিনিটেই ইউরোপের শেনজেন ভিসা, দাম ১৫ লাখ টাকা

সামান্তা সাইদ খান

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ৪ঠা জুলাই ২০২২ ১২:৪৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মাত্র দশ মিনিটে প্রস্তুত ইউরোপের শেনজেন ভিসা-খরচ ৫০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকায়। দালালের কাছে গিয়ে দাম হয়ে যাচ্ছে ১৫ লাখ টাকা।

সম্প্রতি জাল ভিসা চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য। রবিবার বিকেলে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরকম জাল ভিসা নিয়ে ইউরোপ পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই ধরা পড়ে খাটছেন জেল। এ ঘটনার পেছনে কাজ করছে দেশি-বিদেশি একটি চক্র। কোনো দূতাবাস নয়- মেশিন দিয়ে একের পর বের হচ্ছে শেনজেন ভিসা।

 

কারিগর লিটন মাত্র দশ মিনিটেই ছাপান একটি করে শেনজেন ভিসা। তবে এগুলো কোনটাই আসল নয়। জাল এই ভিসা ছাপানোর খরচ পঞ্চাশ টাকা। বিনিময়ে তিনি পান দুই হাজার টাকা।

 

জাল এসব ভিসা যাচ্ছে চক্রের আরেক সদস্য ফুল মিয়ার কাছে। সেখান থেকে যাচ্ছে আরিফ নামের আরেক সদস্যের কাছে। যিনি শেনজেনভুক্ত দেশে যাওয়ার আগ্রহী ব্যক্তিদের পাসপার্টে যুক্ত করে দেন কথিত ওই ভিসা। এরপর জাল ভিসা লাগানো পাসপোর্ট যাচ্ছে চক্রের প্রধান জুয়েলের কাছে। যিনি ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি করে থাকেন গ্রাহকদের সাথে। বিমানের টিকিট কেনাসহ সবকাজ শেষ করে আগ্রহী ব্যক্তিকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত নেয়াই তার কাজ।

 

বিমানবন্দরে অপেক্ষমান ব্যক্তি বিদেশ গমনেচ্ছুদের বুঝে নিয়ে পৌঁছে দেন সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তা আমিরের কাছে। যিনি ইমিগ্রেশন পার করতে সহায়তা করেন তাদের।

 

কাঙ্খিত দেশে পৌঁছানোর সে দেশের ইমিগ্রেশন পার করে আশ্রয় ভিসা পাইয়ে দেয়ার দায়িত্ব ভারতীয় নাগরিক ভি এস রানার। এ যাত্রায় কেউ কেউ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কিংবা ইমিগ্রেশনে ধরা পড়ে আটকে যান অনেকে।

 

জাল ভিসা তৈরিসহ ধাপে ধাপে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিদেশ পাঠানোর চক্রটির সাত সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, সিভিল এভিয়েশনের আর কেউ আছে কিনা সে অনুসন্ধান চলছে।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ঘটনার বিষয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা একটি সংঘবদ্ধ ভিসা জাল-জালিয়াতি প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিদেশ যেতে ইচ্ছুক মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে জাল ভিসা প্রদান করে প্রতারণা করে আসছেন বলে জানান ডিসি মো. মশিউর রহমান। শুধু স্টিকারযুক্ত ভিসা না দেখে- অনলাইনে যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে নেয়ার পরামর্শ পুলিশের।

আরও পড়ুন