আন্তর্জাতিক, ইউরোপ

১৫১৮ সালে 'ড্যান্সিং প্লেগ'-এ আক্রান্ত হয়ে নাচতে নাচতে মারা গিয়েছিল বহু মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

৭ ঘন্টা আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

নাচ মানেই আনন্দ বা উৎসব। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় এমন এক ঘটনা রয়েছে যেখানে নাচ ডেকে এনেছিল ভয়াবহ মৃত্যু। ১৫১৮ সালে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ শহরে (তৎকালীন রোমান সাম্রাজ্য) ঘটেছিল এক অদ্ভুত ঘটনা, যা ‘ড্যান্সিং প্লেগ’ বা নাচের মহামারী নামে পরিচিত। এই ঘটনায় শত শত মানুষ কোনো কারণ ছাড়াই বিরামহীনভাবে নাচতে শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত ক্লান্তিতে বা হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়।

ঘটনার শুরু হয় ১৫১৮ সালের জুলাই মাসে, যখন ‘ফ্রাউ ট্রফিয়া’ নামের এক নারী হঠাৎ শহরের রাস্তায় নেমে নাচতে শুরু করেন। কোনো মিউজিক বা উৎসব ছাড়াই তিনি টানা প্রায় এক সপ্তাহ নাচেন। 

 

অদ্ভুত বিষয় হলো, তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নয়, বরং কোনো এক অদৃশ্য কারণে তার সাথে যোগ দেয় আরও ডজনখানেক মানুষ। আগস্ট মাস নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৪০০-তে।

 

শহরের ডাক্তার এবং কর্মকর্তারা তখন মনে করেছিলেন, তাদের ‘রক্ত গরম’ হয়ে গেছে এবং আরও বেশি নাচলেই তারা সুস্থ হয়ে যাবেন। তাই তাদের জন্য আলাদা স্টেজ তৈরি করা হয় এবং মিউজিশিয়ান ভাড়া করা হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তটি ছিল মারাত্মক ভুল। 

 

বিরামহীন নাচের ফলে মানুষের পা ফুলে ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। অনেকেই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা চরম ক্লান্তিতে লুটিয়ে পড়েন এবং মারা যান। কোনো কোনো ঐতিহাসিক বর্ণনায় দাবি করা হয়েছে, এক পর্যায়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫ জন করে মানুষ মারা যাচ্ছিল।

 

আধুনিক বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এটি ছিল ‘মাস সাইকোজেনিক ইলনেস’ বা গণহিস্টেরিয়া। সে সময় দুর্ভিক্ষ, রোগবালাই এবং কুসংস্কারের কারণে মানুষের মনে যে চরম মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছিল, তা থেকেই অবচেতনভাবে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। 

 

আবার কারও মতে, রুটি তৈরিতে ব্যবহৃত এক ধরণের বিষাক্ত ছত্রাক খেয়ে তাদের হ্যালুসিনেশন হয়েছিল, যা তাদের শরীরে অনিয়ন্ত্রিত খিঁচুনি বা নাচের সৃষ্টি করে।

 

সূত্র: হিস্টোরি

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন