স্কাইট্রাক্স ওয়েবসাইটের দেয়া তথ্যমতে, ২০২৪ সালে কাতারের রাজধানী দোহার হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বিশ্বের সেরা, দৃষ্টিনন্দন ও প্রথম স্থানীয় এয়ারপোর্টের খেতাব জিতে নিয়েছে। মূলত গত ২০২৩ সালের বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টকে পেছনে ফেলে এই গৌরব অর্জন করে কাতার। আবার এই বিমানবন্দরটি কাতারের ফ্ল্যাগশিপ এয়ারলাইন্স কাতার এয়ারওয়েজের মেইন হাব হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
চলতি ২০২৪ সালের ১৭ই এপ্রিল জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল এক্সপোতে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড এয়ারপোর্ট অ্যাওয়ার্ড’ এ কাতারের দোহার হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিমানবন্দর হিসেবে নির্বাচন করা হয়। আর বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা বিমানবন্দর সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। তবে বিশ্বের সেরা ইমিগ্রেশন সার্ভিসের জন্য সেরা বিমানবন্দরের খেতাব জিতে নিয়েছে চাঙ্গি এয়ারপোর্ট। তার পাশাপাশি এটি এশিয়ার প্রথম শীর্ষস্থানীয় বিমানবন্দর।
বিশ্বের সেরা বিমানবন্দরের তালিকায় দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ইনচিওন বিমানবন্দর তৃতীয় স্থানে, জাপানের টোকিও হানেদা এয়ারপোর্ট চতুর্থ স্থানে এবং জাপানের নারিতা এয়ারপোর্ট রয়েছে শীর্ষ পঞ্চম স্থানে। তাছাড়া অন্যান্য সেরা বিমানবন্দরের মধ্যে ইউরোপের দেশ ফ্রান্সের প্যারিস সিডিজি এয়ারপোর্ট ষষ্ঠ স্থানে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট সপ্তম স্থানে, জার্মানির মিউনিখ এয়ারপোর্ট অষ্টম স্থানে, সুইজারল্যান্ডের জুরিখ এয়ারপোর্ট নবম স্থানে এবং তুরস্কের ইস্তানবুল এয়ারপোর্ট রয়েছে বিশ্বের সেরা বিমানবন্দরের তালিকায় দশম স্থানে।
কাতারের হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বর্তমানে বিশ্বের সেরা ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি সেরা এয়ারপোর্ট শপিং এবং দশম বারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের সেরা এয়ারপোর্টের পুরস্কারও জিতে নিয়েছে। প্রায় ৯ হাজার একর বা ৩৬.৪২ বর্গকিলোমিটার জায়গার ওপর এই বিমানবন্দরটি আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগে প্রথম স্থাপিত হয়। বর্তমানে এটি অত্যন্ত বিলাসবহুল ও জাঁকজমকপূর্ণ বিমানবন্দর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত কাতারের হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে ২০১৪ সালের ৩০শে এপ্রিল সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এর বর্তমান বার্ষিক যাত্রী ধারণ সক্ষমতা ২ কোটি ৯০ লক্ষ এবং এর সম্পূর্ণ আধুনিকায়নের কাজ সমাপ্ত হয়ে গেলে এখানে প্রতি বছর গড়ে ৯৩ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। তাছাড়া আশা করা হয় এই এয়ারপোর্টে প্রতি বছর ৩ লক্ষ ২০ হাজার বিমান উঠানামা করতে পারবে এবং এখানে ২০ লক্ষ টন কার্গো হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে।
যদিও এই এয়ারপোর্টে কার্গো হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম শুরু করা হয় গত ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। তবে হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত ২০২৩ সালে এই বিমানবন্দরে মোট যাত্রী যাতায়াত করে ৪.৫৯২ কোটি এবং বিমান উঠানাম করে ২,৫২,০৫৯ টি এবং পণ্য বহন করে ২.৩৪১ মিলিয়ন টন। এই বিমানবন্দরটি আধুনিকায়নে কাতারের আল থানি সরকার প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলারের অধিক অর্থ ব্যয় করে এবং গত ২০২৩ সালে তারা প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারের অধিক রেভিনিউ অর্জন করে।
লেখক: সিরাজুর রহমান, সহকারী শিক্ষক, সিংড়া, নাটোর, বাংলাদেশ।
ডিবিসি/আরপিকে