রাজধানীতে সম্প্রীতি ও ধর্মীয় সহাবস্থান বজায় রাখার এক অনন্য নজির স্থাপন করে বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকার জোয়ার সাহারা মৌজার খিলক্ষেত এলাকায় দুটি মসজিদ এবং একটি মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ দিয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রেলওয়ে তাদের নিজস্ব নিয়মের বাইরে গিয়ে এই কাজটি করল।
আজ বুধবার (২৭শে আগস্ট) রেলভবনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদ, আন-নূর জামে মসজিদ ও খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের পরিচালনা কমিটির হাতে বরাদ্দপত্র তুলে দেওয়া হয়। ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন আরিফ এই বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, তিনটি উপাসনালয় কর্তৃপক্ষ স্থায়ী স্থানের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে আবেদন করেছিল। পরবর্তীতে এই আবেদন রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয় এবং সেখান থেকে এটি অনুমোদিত হয়।
মোট ৩১.১৫ শতাংশ জমি এই উপাসনালয়গুলোকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদ পেয়েছে ২০.১১ শতাংশ, আন-নূর জামে মসজিদ পেয়েছে ৫.৫২ শতাংশ এবং খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির পেয়েছে ৫.৬২ শতাংশ জমি। প্রতিটি প্লটের জন্য প্রতীকী মূল্য ধরা হয়েছে ১০০১ টাকা, যা তিনটি প্লটের জন্য মোট ৩০০৩ টাকা।
অনুষ্ঠানে রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। যারা এই সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন রেলওয়ের এই উদ্যোগকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক দারুণ দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা উপাসনালয় অপবিত্র করতে চায়, তাদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই; তারা কেবল অপরাধী।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম জানান, রেলের আইনে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি বরাদ্দের কোনো বিধান নেই, কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইবোনদের জন্য স্থায়ীভাবে ভূমি দেওয়ার লক্ষ্যে এই আইন কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, রেলপথ সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনসহ অনেকে।
ডিবিসি/এনএসএফ