গাজীপুরের টঙ্গীতে খোলা ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ হওয়া তাসনিম সিদ্দিকী জ্যোতির মরদেহ ৩৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মঙ্গলবার (২৯শে জুলাই) সকাল ৯টার দিকে টঙ্গীর বাষ্পট্টি বিলের মাঝ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে রোববার (২৭শে জুলাই) রাত ৮টার দিকে টঙ্গী পশ্চিম থানার হোসেন মার্কেট এলাকায় ভারী বৃষ্টির মধ্যে হাঁটার সময় খোলা একটি ম্যানহোলে পড়ে যান জ্যোতি। মুহূর্তেই স্রোতের তোড়ে পানিতে তলিয়ে যান তিনি। ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করলেও দীর্ঘ সময় কোনো সন্ধান মেলেনি।
মৃত তাসনিম সিদ্দিকী জ্যোতি রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর সেক্টরে থাকতেন। তিনি ‘মনি ট্রেডিং’ নামক একটি ওষুধ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদপাড়ায়। তিনি ওই এলাকার মৃত ওলিউল্লাহ আহাম্মদ বাবলুর মেয়ে।
টানা উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এই অবরোধে সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, টঙ্গীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার ভয়াবহ দুরবস্থার কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ১২ ফুট প্রশস্ত ড্রেন সংকুচিত করে মাত্র ৬ ফুটে নামিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে বর্ষার সময় পানির প্রবল স্রোত সৃষ্টি হয় এবং খোলা ম্যানহোলগুলো মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে।
ফায়ার সার্ভিসের টঙ্গী ইউনিটের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম জানান, “দুর্ঘটনাস্থলের ম্যানহোলটি প্রায় ১০ ফুট গভীর এবং ভারী বর্ষণের কারণে সম্পূর্ণভাবে পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে আজ সকাল ৯টার দিকে ডুবুরি দল মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।”
এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসকান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, “ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে গেছি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।”
ডিবিসি/এমএআর