বাংলাদেশ, জাতীয়

৩৬ দিনের আন্দোলনে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের

ডিবিসি ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ১লা জুলাই ২০২৫ ০৯:৫৪:১২ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। ৩৬ দিনের দীর্ঘ আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাধ্যমে। যে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। তবে, আন্দোলনের শুরুটা ছিল আরও আগে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের কোটা সংস্কারের জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সরকারের দমন-নিপীড়নের মুখে তা সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে এক মাসের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের। আর এই আন্দোলনের শুরুটা হয়েছিল এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই।


কোটাভিত্তিক পদ কমানো, শূন্য পদে মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণের দাবিতে আন্দোলনের শুরুটা ২০১৮ সালে। তখন প্রথমদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সরকার খুব একটা গুরুত্ব না দিলেও ঐ বছরই তীব্র আন্দোলনের মুখে কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বাতিলের ঘোষণা দেয় সরকার।


এ ঘটনার ছয় বছর পর আবারো সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয় ২০২৪ সালের ৫ই জুন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় উচ্চ আদালত। এর প্রতিক্রিয়ায় ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয় শহিদ মিনারে।


এরপর শুরু হয় চুড়ান্ত আন্দোলনের পথ। শিক্ষার্থীরা 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'র ব্যানারে সংগঠিত হয়। সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের সরকারি বিজ্ঞপ্তি পুনঃবহালের দাবিতে টিএসসি এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে। পরের কয়েকদিন দেশের অন্যান্য অংশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ৪ঠা জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ৫ই জুন দেয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। পরদিন ৬ই জুলাই শিক্ষার্থীরা 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির ডাক দেয়। ধীরে ধীরে আন্দোলনে যোগ দিতে থাকেন সর্বস্তরের মানুষ। সরকার বেছে নেয় দমন নিপীড়নের পথ। রংপুরে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হবার পর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। যোগ দেয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 
 

আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের ডিবি হেফাজতে নেয়া হলে একে একে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ আন্দোলনে নেমে পড়ে। কোটা সংস্কার আন্দোলন রূপ নেয় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনে। একদফা দাবি উঠে- শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তি ঘটে আওয়ামী সরকারের পতনের মাধ্যমে। ততদিনে ঝড়ে গেছে হাজারো প্রাণ।


শিক্ষার্থীরা মনে করেন, জুলাইয়ের অভ্যুত্থান তাদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে এবং একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য তরুণ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে শিখিয়েছে।

 

ডিবিসি/এএনটি

আরও পড়ুন