বিনোদন, ঢালিউড

৭৭ এ পা রাখলেন ‘আম্মাজান’

বিনোদন ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ১৭ই আগস্ট ২০২৩ ১১:১৫:১৩ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও কালজয়ী সিনেমা ‘আম্মাজান’। কিংবদন্তি অভিনেতা ও নির্মাতা কাজী হায়াত নির্মিত এই সিনেমায় নায়কের চরিত্রে ছিলেন মান্না। আর সিনেমার নাম ভূমিকা তথা আম্মাজানের চরিত্রে অভিনয় করেন অভিনেত্রী শবনম। আজ ৭৭ এ পা রাখলেন ‘আম্মাজান’।

১৯৪০ সালের আজকের দিনে (১৭ আগস্ট) ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন  শবনম। তার আসল নাম ঝর্ণা বসাক। শৈশবে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে নাচ শেখেন তিনি। অসাধারণ নাচের দক্ষতা অর্জন করে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। এক অনুষ্ঠানে শবনমের নৃত্য দেখে তাকে সিনেমায় নাচের সুযোগ করে দেন বরেণ্য নির্মাতা এহতেশাম।

১৯৬১ সালে শবনম প্রথম নায়িকা হিসেবে অভিনয় শুরু করেন। মুস্তাফিজ পরিচালিত সিনেমাটির নাম ছিল ‘হারানো দিন’। এই সিনেমাতেই তিনি শবনম নামটি ধারণ করেন। সিনেমাটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। এর পরের বছরই উর্দু ‘চান্দা’ সিনেমায় অভিনয় করে তিনি তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ষাটের দশকে তার অভিনীত ‘তালাশ’ সিনেমা পাকিস্তানে মুক্তি পেলে ওই সময়ের সর্বাপেক্ষা ব্যবসা সফল সিনেমার মর্যাদা লাভ করে। এছাড়া তার অভিনীত ‘আয়না’ সিনেমা পাকিস্তানের সিনেমা হলগুলোতে দীর্ঘদিন চলার রেকর্ড করে। এরপর তিনি টানা নব্বই দশক পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। 

১৯৬৮ সাল থেকে তিনি লাহোরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিলেন। এ সময়কালে পাকিস্তানে শবনম-ওয়াহিদ মুরাদ, শবনম-নাদিম জুটি জনপ্রিয় ছিল। পরবর্তীতে পাঞ্জাবি সিনেমাতেও অভিনয় করেন এ অভিনেত্রী। ১৯৮৮ সালে পুনরায় ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন আর নব্বইয়ের দশক থেকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে বসবাস শুরু করেন।

শবনম অভিনীত বাংলা সিনেমাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ‘আমার সংসার’, ‘এ দেশ তোমার আমার’, ‘আম্মাজান’, ‘কখনো আসেনি’, ‘জোয়ার ভাটা’, ‘নাচের পুতুল’, ‘রাজধানীর বুকে’, ‘সহধর্মিনী’ ইত্যাদি। তার অভিনীত উর্দু সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘আখেরি স্টেশন’, ‘আসরা’, ‘আনমল মোহাব্বত’, ‘আনারি’, ‘আনোখী’, ‘আয়না’, ‘আবশার’, ‘আখো আখো মে’, ‘ইন্তিখাব’, ‘কারাবান’, ‘ক্যয়সে কাহু’, ‘কসম আজ ওয়াক্ত কি’, ‘কাভি আলভিদা না ক্যাহনা’, ‘চান্দা’, ‘চালো মান গায়ে’, ‘জাঞ্জীর’, ‘জাগীর’, ‘তালাশ’, ‘তুম মেরে’, ‘দোস্তী’, ‘দিল্লাগী’, ‘দিল নাশীন’, ‘নয়া আন্দাজ’, ‘নারাজ’, ‘প্রীত না জানে রীত’, ‘পেহচান’, বেগানা’, ‘বিন্দাস’, ‘রিশতা’, ‘হাম দোনো’, ‘শরীক-ই-হায়াত’, ‘শরাফত’, ‘সাগর’ ও ‘সমন্দার’।

পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে অসামান্য অবদান রাখায় ১২ বার সে দেশের সম্মানজনক নিগার পুরস্কার লাভ করেন শবনম। এছাড়া ২০১৯ সালে স্টাইল অ্যাওয়ার্ডে তাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

শবনমকে সর্বশেষ নায়ক মান্না অভিনীত ‘আম্মাজান’ সিনেমায় দেখা গেছে। এরপর তাকে আর চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি। ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে চলচ্চিত্র থেকে গুটিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে শবনম বলেছিলেন, ‘আম্মাজান’ করার পর উপযুক্ত চরিত্রের অভাবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো হয়নি। ইচ্ছে থাকলেও একই সঙ্গে মনের মতো চিত্রনাট্য ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর কাজ করা হয়নি।’

ব্যক্তিগত জীবনে শবনম বিয়ে করেছিলেন সঙ্গীত পরিচালক রবিন ঘোষকে। তাদের বিয়ে হয়েছিল ১৯৬৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর। ২০১৬ সালে রবিন ঘোষ মৃত্যুবরণ করেন। শবনম-রবিন দম্পতির একমাত্র সন্তান রনি ঘোষ।

ডিবিসি/আরপিকে

আরও পড়ুন