বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

‘এমন বউ যেন কারও কপালে না জুটে’ লিখে মায়ের উদ্দেশে চিঠি রেখে স্ত্রীকে হত্যা

গাজীপুর প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ২৭শে জুন ২০২৪ ০২:৫৩:৫১ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

গাজীপুরের শ্রীপুরে তিনতলা ভবনের একটি কক্ষ থেকে ২২ বছর বয়সী এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় মরদেহের পাশ থেকে স্বামীর মায়ের কাছে লিখা একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের বাড়ির তিনতলার একটি কক্ষ থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে মীমের হত্যাকারী স্বামী আল আমিন না অন্য কেউ তা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।

 

নিহত মীম (২২) সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার মুলকান্দি ছোট বেড়া খারুয়া ছোটপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। সে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি থানার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে আল আমিন (২৪) এর স্ত্রী। আল আমিন শ্রীপুরের মাওনা গ্রামের স্বাদ গ্রুপের স্বাদ টেক্সটাইল মিলে সিনিয়র হেলপার পদে চাকুরির সুবাদে স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন।

 

বাড়িটির তত্ত¡াবধায়ক মো: মোস্তাকিম জানান, ৩ মাস আগে মীম-আল আমিন দম্পতি ওই বাড়ির তিন তলার ৩৩ নাম্বার রুমে ভাড়ায় উঠেন। বুধবার দুপুর ১টার দিকে আল আমিনের সহকর্মী আরিফ বাসায় এসে জানান, আল আমিন তার স্ত্রী মীমকে হত্যা করে কক্ষে তালা মেরে গিয়েছে। মীমকে হত্যার পর আল আমিন বিষয়টি কারখানায় গিয়ে সহকর্মী আরিফকে জানিয়েছেন। পরে তিনি বিষয়টি বাড়ির অন্যান্যদের জানান পাশাপাশি পুলিশে খবর দেন।

 

ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে আসেন নিহত মীমের খালা সালমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘৬ মাস আছে আল আমিন মীমের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ভালই চলছিল তাদের সংসার। কিছু দিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে মাওনা উত্তরপাড়ায় রুম ভাড়া নেন আল আমিন। তবে হত্যা কি কারণে হলো তা তিনি জানাতে পারেননি।’

 

এবিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে স্বামী আল আমিনের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। হত্যাকাণ্ডটি কে বা কারা ঘটালো তা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বজনদের খবর দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

মায়ের কাছে লিখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে- 'মা আমারে মাফ কইরা দিয়ো। অনেক স্বপ্ন ছিল তোমারে কোনদিন কস্ট দিবো না। কিন্তু এমন একজন মানুষ তুমি আমারে আইনা দিছো, যার অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই সিদ্ধান্ত নিলাম। তিলে তিলে মরার চাইতে একবারে মরে গেলাম। সবাই আমারে মাফ কইরা দিয়ো।

সে আমারে কয়েক মাসের মধ্যে মানসিক রোগী বানাইয়া ফেলছে। পরিশেষে সবার জন্য দোয়া করে গেলাম। এমন বউ যেন কারো কপালে না জুটে।' 

 

এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বাকী টাকা পরিশোধের কথা জানিয়ে চিঠিটির পরিশেষে লিখা হয়েছে, 'নিজেই একা মইরা যাইতাম। কিন্তু এরে যদি বাচাইয়া রাইখা যাই, এ আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবো, তাই মাইরা ফেললাম। অনেক স্বপ্ন ছিল রাসুলের সব সুন্নাহ্ গুলি আমার জীবনে বাস্তবায়িত করমু, কিন্তু পারলাম না! তার মায়ের মোবাইল নাম্বার ও নিহত মীমের নানার মোবাইল নাম্বার লিখে দেয়া হয়েছে মায়ের কাছে লিখা চিঠিতে।

 

ডিবিসি/ এসএইচ

আরও পড়ুন