বাংলাদেশ, জাতীয়

জুলাই আন্দোলনের অনেক সক্রিয় অংশগ্রহণকারীর এখন আর তৎপরতা নেই

ডিবিসি ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ১১ই জুলাই ২০২৫ ১২:৩৬:২৩ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

গত বছর ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ঘটে যাওয়া 'জুলাই বিপ্লবের' পর থেকে অনেক সক্রিয় আন্দোলনকারী এখন নীরবতা পালন করছেন। নানা ইস্যুতে হতাশা, মতভেদ এবং প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বিশাল ফারাকের কারণে তারা বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, লোভ ও লাভের কাছে জুলাই বিপ্লবের চেতনা ম্লান হয়ে গেছে এবং আন্দোলনের কৃতিত্ব দখলের অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়ে তা স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠে এক স্বৈরাচারবিরোধী জাতীয় ঐক্য। রাজনৈতিক দল, সংস্কৃতি কর্মী, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, আইনজীবী, শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই আন্দোলনে অবশেষে চূড়ান্ত বিজয় আসে।

 

তবে, ফ্যাসিবাদী সরকারের বিদায়ের পর এবং '৩৬ জুলাই' (জুলাই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকী) আসার আগেই আন্দোলনের কৃতিত্বের দাবিদার হয়ে উঠেছেন হাতেগোনা কয়েকজন। এতে প্রথম সারিতে থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে আন্দোলনে আহতরাও যেন এখন গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই আক্ষেপ আর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামী এবং সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় বলেন, শুধু ৩৬ দিনের আন্দোলনে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়নি। এর পেছনে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে পাহাড়সম মামলা জর্জরিত বিএনপির দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও আত্মত্যাগ।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে যারা সমন্বয়ক বা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারাও এখন আশাহত। প্ল্যাটফর্মটির সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ইতিমধ্যেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং তার পথে হেঁটেছেন আরও অনেকে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য সংগঠক হাসিবুল ইসলামও এই হতাশার কথা বলেছেন।

 

আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেওয়াদের অনেকের অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কেউ কেউ চাঁদাবাজি ও অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন।

 

এছাড়া, আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেওয়া সাংস্কৃতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, আইনজীবী, নারী ও শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ বলছেন, নতুন বাংলাদেশের সামনে আকাশছোঁয়া সম্ভাবনা ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানীসহ অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, জুলাই বিপ্লব যদি 'বেহাত' হয়, তাহলে আবারও ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।

 

ডিবিসি/এএনটি

আরও পড়ুন