বিনোদন, সংস্কৃতি

‘ফ্লপমাস্টার’ থেকে বাংলা সিনেমার ‘মহানায়ক’ উত্তম কুমার!

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ২৪শে জুলাই ২০২৫ ০৮:৩৭:৪৩ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

নায়ক বলতেই আমরা হালের যে সুঠাম চেহারার অধিকারী, অ্যাকশন-নাচগানে পটু অবয়বটির কথা কল্পনা করি, সেই চেনা কাঠামোর সঙ্গে উত্তম কুমারের কোনও মিলই নেই, চেহারায় নয়, ঢংয়ে নয়, নয় আচরণেও। তবুও তিনি অনবদ্য, তিনি অনন্য, তিনি বাংলার মহানায়ক ‘উত্তম কুমার’!

সিনেমার পর্দায় বাঙালি যে ক’জন আইডলকে খুঁজে পেয়েছে, নিঃসন্দেহে তিনি তাঁদের অগ্রগণ্য। শুধু রোমান্টিক নায়ক হিসেবেই নয়, উত্তম কুমার তাঁর অভিনয় জীবনে বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। উত্তম কুমার শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলা সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। 'অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি' ছবিতে কবিয়ালের চরিত্র কিংবা সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় 'নায়ক' এবং 'চিড়িয়াখানা', উত্তম কুমার আমাদের চোখে লেগে আছেন সেই কবে থেকে! 'নায়ক' ছবিতে তাঁর চরিত্রটি ছিল একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র তারকার, যা অনেকাংশেই তাঁর নিজের জীবনের প্রতিচ্ছবি বলে মনে করা হয়। 'চিড়িয়াখানা' ছবিতে তিনি গোয়েন্দা ব্যোমকেশ বক্সীর চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (তৎকালীন 'ভারত পুরস্কার') লাভ করেন।


তাঁর অসাধারণ অভিনয় প্রতিভা, ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্ব এবং বাঙালি দর্শকদের উপর তাঁর অসামান্য প্রভাবের কারণেেই তাঁকে 'মহানায়ক' উপাধি দেওয়া হয়। উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেন জুটি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। 'সাড়ে চুয়াত্তর' থেকে শুরু করে 'হারানো সুর', 'পথে হলো দেরী', 'সপ্তপদী', 'চাওয়া পাওয়া', 'বিপাশা', 'জীবন তৃষ্ণা' এবং 'সাগরিকা'-এর মতো অসংখ্য ছবিতে তাদের রসায়ন দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল। এই জুটি প্রায় ৩০টি চলচ্চিত্রে একসাথে কাজ করেছেন এবং তাদের বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই কালজয়ী ক্লাসিক হিসেবে বিবেচিত হয়।
 

অভিনয়ের পাশাপাশি উত্তম কুমার প্রযোজনা ও পরিচালনায়ও ছাপ রেখেছিলেন। তাঁর প্রযোজনা সংস্থা থেকে 'হারানো সুর', 'সপ্তপদী'-র মতো সফল চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। তিনি 'শুধু একটি বছর', 'বনপলাশীর পদাবলী' এবং 'কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী' (অসমাপ্ত) চলচ্চিত্রগুলো পরিচালনাও করেন। সেখানেও দেখিয়েছিলেন নিজের মুনশিয়ানা।
 

১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই, 'ওগো বধূ সুন্দরী' ছবির শুটিং চলাকালে বাঙালি হারিয়েছিল তার সবচেয়ে আপন নায়ককে। কলকাতার আকাশ সেদিন যেন কেঁদেছিল। সেই শোক আজও বুকে বাজে। তারপরও উত্তম কুমার রয়ে যান বইয়ের পাতায়, সিনেমার পোস্টারে, ঠাকুরঘরে তুলে রাখা পুরোনো অ্যালবামে।
 

ডিবিসি/এফএইচআর 

আরও পড়ুন