গতির ঝড়ে ব্যাটসম্যানদের মনে ভয় ধরানো, ক্রিকেট বিশ্বের সর্বকালের দ্রুততম বোলার, পাকিস্তানের কিংবদন্তী পেসার শোয়েব আখতারের জন্মদিন আজ। ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ খ্যাত এই তারকা আজ ৫০ বছরে পা রাখলেন। ১৯৭৫ সালের ১৩ আগস্ট পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
আধুনিক ক্রিকেটে গতিময় পেসারদের তালিকায় তিনি ছিলেন এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। তার লম্বা রান-আপ, কাঁধের পেশীর অসাধারণ ব্যবহার এবং হিংস্র ডেলিভারি তাকে দিয়েছিল অনন্য পরিচিতি। ক্রিকেট মাঠে তার আগ্রাসী মনোভাব এবং খেলার প্রতি আবেগ তাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে তুলেছিল।
শোয়েব আখতারের নাম ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে তার গতির জন্য। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার (১০০.২ মাইল) বেগে বল করে বিশ্বরেকর্ড গড়েন, যা আজও অক্ষত। ক্রিকেট ইতিহাসে তিনিই প্রথম বোলার হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০০ মাইলের গণ্ডি পেরোন।
১৯৯৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় শোয়েবের। এরপর থেকে পাকিস্তানের হয়ে ৪৬টি টেস্ট, ১৬৩টি ওয়ানডে এবং ১৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। টেস্টে ২৫.৬৯ গড়ে ১৭৮টি এবং ওয়ানডেতে ২৪.৯৭ গড়ে ২৪৭টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্তগুলোর একটি ছিল ১৯৯৯ সালে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে পরপর দুই বলে রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকারকে বোল্ড করা। শচীনকে করা সেই ডেলিভারিটি ছিল তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইয়র্কার।
তবে শোয়েব আখতারের ক্যারিয়ার শুধু সাফল্যে মোড়ানো ছিল না, বিতর্কেও জড়িয়েছেন বহুবার। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং সতীর্থদের সঙ্গে বিবাদের কারণে একাধিকবার দল থেকে বাদ পড়েছেন। ইনজুরিও তার ক্যারিয়ারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান এই গতি তারকা।
ক্রিকেট ছাড়ার পর শোয়েব আখতার ধারাভাষ্যকার এবং ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবে নতুন ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ক্রিকেট বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্পষ্টবাদী মতামত দিয়ে প্রায়শই আলোচনায় থাকেন তিনি। তার বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা এবং ক্রিকেট নিয়ে গভীর জ্ঞান ভক্তদের কাছে তাকে নতুন করে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
জন্মদিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটার এবং বিশ্বজুড়ে থাকা তার অগণিত ভক্তদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’। তার দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন কামনা করে বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা তাদের প্রিয় তারকাকে স্মরণ করছেন।
ডিবিসি/এনএসএফ