বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

সহায়ক পুলিশ ও গোয়েন্দা লাগলে জামায়াত-শিবিরের লোক দেব: ওসিকে জামায়াতের প্রার্থী

চট্টগ্রাম ব্যুরো

ডিবিসি নিউজ

২ ঘন্টা আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পুলিশের ‘সহায়ক শক্তি’ ও ‘গোয়েন্দা কর্মী’ হিসেবে জামায়াত ও শিবিরের কর্মীদের কাজে লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও মিরসরাই আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে তাঁকে এমন প্রস্তাব দিতে দেখা যায়, যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

 

জানা যায়, প্রায় এক সপ্তাহ আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে মিরসরাই থানায় যান সাইফুর রহমান। সেখানে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমানের সঙ্গে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন তিনি। ওই আলোচনার একটি ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

 

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ওসি আতিকুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে সাইফুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, “মিরসরাইয়ে ক্রমবর্ধমান ডাকাতি চলছে। আমরা যদি দু-একটা ডাকাতকে স্ট্যান্ডবাই ধরতে পারতাম, শাস্তি দিতে পারতাম এবং মানুষের নজরে আনতে পারতাম, তখন হয়তো সবাই মনে করত যে এখানে অ্যাকশনমূলক কাজ হচ্ছে।”

 

পুলিশকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, “আপনি যদি লজিস্টিক সাপোর্ট চান, আপনার পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে যদি মনে করেন যে সহায়ক পুলিশ লাগবে, আমি শীঘ্রই জামায়াতের লোক দেব। যদি মনে করেন যে গোয়েন্দার লোক লাগবে, আপনি ইউনিয়ন ভিত্তিতে গোয়েন্দার টিম গঠন করেন, আমি স্পেশালি লোক সাপ্লাই দেবো।”

 

তিনি আরও বলেন, “ডিজিএফআই ও এসবির দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথেও আমি কথা বলেছি। আমি বলেছি, আপনারা ইনফরমেশন দিলে না পুলিশ অ্যাকশনে যাবে। আপনারা কী কাজ করেন? আপনাদের টিমটা কোথায়? আমরা সত্যিকার অর্থে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা তো আর ডাকাত ধরার জন্য বাড়িতে বাড়িতে হানা দিতে পারি না, উল্টো আমাদেরকেই ডাকাত হিসেবে চিহ্নিত করবে। কার্যকরী উদ্যোগ আপনাকে নিতে হবে, আপনি যদি নেন সেক্ষেত্রে আমরা আপনার পাশে থাকব।”

 

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাইফুল্লাহ সাইফ নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, “জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান ওসিকে হেকমতে ভরা কণ্ঠে নসিহত করেছেন। উনি মিরসরাই আসনে সংসদ পদপ্রার্থী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। এবার সংসদ সাজবে ‘যেমন খুশি তেমন সাজাও’ মন্ত্রে।”

 

ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে মো. জহিরুল আলম কাউসার নামের একজন লিখেছেন, “হুদাই পুলিশের পেছনে টাকা খরচ করছেন, বিনা পয়সায় যদি গোয়েন্দা আর সিভিলিয়ান শিবির বাহিনী পাওয়া যায়, আর কি কোনো চিন্তা লাগে?” এমডি কাদের মোল্লা নামের আরেক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, “এমন জোরজবরদস্তি হাসিনাও করেনি।”

 

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের মুখে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান। তিনি দাবি করেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর বক্তব্য কাটছাঁট করে প্রচার করছে।

 

সাইফুর রহমান বলেন, “এলাকায় ব্যাপক হারে চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ আগে ওসির সাথে দেখা করে রাজনৈতিক দল হিসেবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলাম। আলোচনার পর বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে মানুষ পাহারা শুরু করায় চুরি-ডাকাতি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এটি এলাকায় প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু পুলিশের সাথে আমার বলা কথাগুলোকে আগে-পরে কেটে ছেঁটে প্রচার করা হচ্ছে। আমি মনে করি, যারা কথা বিকৃত করে প্রচার করছে তারা ডাকাতদের সহযোগী। যে কয়েকটি আইডি থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এগুলো ছড়ানো হচ্ছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।”

 

ডিবিসি/এসএফএল

আরও পড়ুন